পূর্ব মেদিনীপুর: পূর্ব মেদিনীপুরের সমুদ্র উপকূলবর্তী এলাকা জুনপুট। সেখানে দেদার চলছে মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্য। দুষ্কৃতীদের সেই দৌরাত্ম্য থামানোর জন্য এবার তৎপর হল পুলিশ প্রশাসন। চিরুনি তল্লাশি চালাল জুনপুট উপকূল থানার পুলিশ সহ প্রশাসনের আধিকারিকরা। রাতভর তল্লাশি চালিয়ে জুনপুট উপকূল থানার পুলিশ রাতের অন্ধকারে মাটি পাচার করার অভিযোগে ৪ অভিযুক্তকে পাকড়াও করে। পাশাপাশি জেসিবি ও ট্রাক বাজেয়াপ্ত করে তারা।
শনিবার দুপুরে সমুদ্র উপকূলবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা তল্লাশি চালান দেশপ্রাণ ব্লকের বিডিও শুভজিৎ জানা, ভূমি দফতরের আধিকারিক ও জুনপুট উপকূল থানার ওসি প্রলয় চন্দ্র সহ একাধিক পুলিশ আধিকারিকরা। সাম্প্রতিক কয়েক দিন ধরে জুনপুট উপকূল থানার বিস্তীর্ণ এলাকায় রাতের অন্ধকারে ট্রাকে করে চুরি যাচ্ছিল মাটি। অভিযোগ পেয়ে গোপন সূত্রে অভিযান চালিয়ে পুলিশ ৪ অভিযুক্তকে পাকড়াও করে।
জুনপুট উপকূল থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা হল মহিষাদল এলাকায় মফিজুল আলি খান ও জুনপুট উপকূল থানার বিচুনিয়া এলাকার শেখ ভোলা ও সাবুল খান, অন্য একজন জুনপুট উপকূল থানার পশ্চিম ভগবানপুর গ্রামের বিপুল কুমার নায়ক। শনিবার অভিযুক্তদের কাঁথি মহকুমা আদালতে তোলা হয়।
সূত্রের খবর, সমুদ্র উপকূলবর্তী এই এলাকা থেকে রাতের অন্ধকারে চুরি যাচ্ছিল মাটি। এনিয়ে জুনপুট উপকূল থানার পুলিশের কাছে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ আসে। সেই অভিযোগ পেয়ে পুলিশ আগেই বিপুল নায়ক নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। আদালত থেকে অভিযুক্তকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে বেশ কিছু তথ্য জানতে পারে। শনিবার রাতভর তল্লাশি চালিয়ে এই ঘটনার যুক্ত থাকার অভিযোগে আরও ৩ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। পাশাপাশি ট্রাক ও জেসিপি আটক করে পুলিশ। ঘটনা জানাজানি হতেই শনিবার সকালে পরিদর্শনে আসেন কাঁথি দেশপ্রাণ ব্লকের বিডিও শুভজিৎ জানা ও ভূমি দফতর আধিকারিক। জুনপুট উপকূল থানার ওসি প্রলয় চন্দ্র সহ আধিকারিকরা বিস্তীর্ণ এলাকা পরিদর্শন করেন।
ঘটনার বিষয়ে কাঁথির মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সোমনাথ সাহা বলেন, “মাটি মাফিয়াদের দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পাশাপাশি ট্রাক ও জেসিপি আটক করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তের খোঁজে জোরদার তল্লাশি শুরু করা হয়েছে। মাটি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চলবে।”
এখানেই শেষ নয়, অবৈধভাবে কেলেঘাই নদী থেকে মাটি কাটার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে দু’জনকে। স্থানীয় মানুষজনের দীর্ঘ দিনের অভিযোগ কেলেঘাই নদীর বুকেই একাধিক ইটভাটা গজিয়ে উঠেছে । এই সব ভাটায় ইট তৈরির জন্যে অবৈধভাবে নদীর মাটি কেটে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Teacher Transfer: শিক্ষক বদলির ‘দাম’ ১ লাখ ২৫ হাজার, তদন্তের জাল গোটাতে ঘাটালের স্কুলে সিআইডি দল