Tamluk Medical College: ডাক্তারবাবু কোথায়? তাম্রলিপ্ত মেডিক্যালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে নাজেহাল রোগীরা

TV9 Bangla Digital | Edited By: Soumya Saha

Jan 11, 2023 | 5:16 PM

Tamluk: পূর্ব মেদিনীপুরের তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজের চিত্রও ঘুরে দেখল টিভি নাইন বাংলা। সময়ে ডিউটিতে না আসার 'রোগ' থাবা বসিয়েছে এই হাসপাতালেও, এমনই অভিযোগ উঠে আসছে।

Tamluk Medical College: ডাক্তারবাবু কোথায়? তাম্রলিপ্ত মেডিক্যালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা পরিষেবা পেতে নাজেহাল রোগীরা
তমলুক মেডিক্যাল কলেজ

Follow Us

তমলুক: রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসকদের গরহাজিরা নিয়ে কিছুদিন আগে নবান্নের বৈঠকে সরব হয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের আচমকা পরিদর্শনে যাওয়ার নির্দেশও দিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশের পর কতটা হাল ফিরল সরকারি হাসপাতালগুলিতে? সরকারি হাসপাতালগুলির আউটডোর পরিষেবার চিত্র বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে তুলে ধরেছে টিভি নাইন বাংলা। এবার পূর্ব মেদিনীপুরের তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজের চিত্রও ঘুরে দেখল টিভি নাইন বাংলা। সময়ে ডিউটিতে না আসার ‘রোগ’ থাবা বসিয়েছে এই হাসপাতালেও, এমনই অভিযোগ উঠে আসছে।

তাম্রলিপ্ত হাসপাতালের বহির্বিভাগ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু রোগী এখানে আসেন সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়ার আশায়। কিন্তু বাস্তব চিত্রটা ঠিক কেমন? হাসপাতালের বোর্ডে লেখা বহির্বিভাগে রোগী দেখার সময় সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো। কিন্তু আউটডোরে পরিষেবা পেতে গিয়ে কার্যত নাভিশ্বাস ওঠে রোগীর ও তাঁদের পরিজনদের। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা। অভিযোগ উঠছে, সকাল সাড়ে ১০টা পেরিয়ে গেলেও ডাক্তারবাবুর দেখা মেলে না। কোনওদিনই চিকিৎসকরা সময়ে আসেন না বলে অভিযোগ।

জেলার দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা আসেন এখানে তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজের বহির্বিভাগে পরিষেবা পাওয়ার জন্য। ভোর রাত থেকে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন তাঁরা। কিন্তু সকাল ৯টা থেকে বহির্বিভাগে চিকিৎসকের দেখা পাওয়া যায় না কোনওদিনই, অভিযোগ উঠছে এমনই। কোনওদিন সকাল সাড়ে ৯টা, কখনও ১০ টা, এমনকী কখনও সাড়ে ১০ টা বেজে গেলেও ডাক্তারবাবুর দেখা মেলে না বলে অভিযোগ।

আর এখানেই প্রশ্ন উঠছে, কেন এই দেরি? তাঁরা তো সরকারি চিকিৎসক। সাধারণ মানুষের দেওয়া করের থেকে সরকার তাঁদের টাকা দেয়। তাহলে কেন সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে এই গাফিলতি? স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাঁরা ওই সময়ে কী করেন? তাঁরা কি প্রাইভেটে প্র্যাক্টিস করেন ওই সময়ে? যদিও হাসপাতালের চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, তাঁরা নির্ধারিত সময়ের আগেই পৌঁছে যান। কিন্তু হাসপাতাল চত্বরে কোনও না কোনও কাজে তাঁরা যুক্ত ছিলেন। অর্থাৎ, তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা হাসপাতালেই ছিলেন, কিন্তু তাও পরিষেবা শুরু করতে দেরি। প্রায় প্রত্যেকদিনই একই চিত্র।

আর এই যাঁতাকলের মধ্যে পড়ে পিষতে হচ্ছে রোগীদের। কেউ বলছেন, দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হচ্ছে, কোমরে সমস্যা। কিন্তু তাও উপায় নেই। কারণ, ডাক্তারবাবু তখনও আসেননি। আবার কেউ বলছেন, লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন ভোর থেকে, কিন্তু ডাক্তারবাবু আসেননি। কাকে আর কী বলবেন। টিভি নাইন বাংলার ক্যামেরা সকাল ৯টা থেকে অপেক্ষায় ছিল। কিন্তু ডাক্তারবাবু বালাকৃষ্ণণের শেষ পর্যন্ত দেখা মিলল সাড়ে দশটারও পর। যদিও তাঁকে প্রশ্ন করায় তিনি বলছেন, ইমার্জেন্সির রোগী দেখতে গিয়ে তাঁর দেরি হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল তাম্রলিপ্ত মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গেও। অধ্যক্ষ শর্মিলা মল্লিক বলছেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেবেন। তবে তাঁর বক্তব্য, চিকিৎসক তাঁকে বলেছেন তিনি ৯টার আগেই ঢুকেছেন। কিছুক্ষণ হাউস স্টাফ রোগী দেখে, ওটিতে গিয়েছিলেন। তারপর অধ্যক্ষের ঘরে কিছু কাগজ সই করতে এসেছিলেন ওই চিকিৎসক। তখনই অধ্যক্ষকে এই কথা বলেছেন তিনি।

যোগাযোগ করা হয়েছিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বিভাস রায়ের সঙ্গেও। তিনি বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কিছু না বললেও, টিভি নাইন বাংলার প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন, যেহেতু এটি এখন মেডিক্যাল কলেজে রূপান্তরিত হয়েছে, তাই এটি এখন তাঁর অধীনে নয়। তবে তিনি সমন্বয়সাধনের ভূমিকায় রয়েছেন। তবে এই গাফিলতির অভিযোগ তিনি কিছু বলতে চাননি।

Next Article