পূর্ব মেদিনীপুর: মাঝে মাঝে রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে হঠাৎ করে কিশোর কিশোরীদের অপহরণের খবর সামনে আসে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আতঙ্কের কারণে পরিস্থিতি এমন দিকে মোড় নেয় যে সন্দেহজনক কোনও ব্যক্তিকে দেখা মাত্রই ছেলেধরা সন্দেহ তাঁর ওপর চড়াও হয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলরা জুনপুট এলাকার পরিস্থিতি বেশ কয়েকিদন ধরেই উত্তপ্ত। কয়েকদিন আগেই ছেলে ধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে এক ভবঘুরে মৃত্যুর ঘটনায় যথেষ্ট চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে শুক্রবার সকালে এক কিশোরের ঘটনা শুনে স্থানীয় এলাকায় নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। ছেলে ধরার উপদ্রবের আশঙ্কা করে ওই এলাকার বাসিন্দারা যখন আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন, ঠিক তখন এই ঘটনা সামনে আসায় বাসিন্দাদের দুশ্চিন্তা অনেকটাই বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। শুক্রবার স্থানীয় থানায় কিশোরের বক্তব্য শোনার পর তৎপরতার সঙ্গে পুলিশ প্রশাসন ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
এবার মূল ঘটনা প্রসঙ্গে ফিরে আসা যাক। বুধবার ভূপতিনগরে মাধাখালি এলাকার সৃষ্টিধর করণের ছেলে ১০ বছর বয়সী সুমন করণ বিকেল পাঁচটা নাগাদ সাইকেল সারাতে গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল। পরিবারে লোকের অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার সকালে হেঁড়িয়া বাজার থেকে সুমনকে উদ্ধার করে পুলিশ। সুমনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশের হাতে এমন তথ্য উঠে এসেছে যে শুনে অনেকেই অবাক হয়ে গিয়েছেন। ঘটনার মুহূর্তের ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়াতে ভাইরাল হয়েছে।
শিশুটি পুলিশকে জানিয়েছে, “সাইকেল সারাতে গিয়েছিলাম। আমার সামনে একটি মারুতি এসে দাঁড়ায়। গাড়ির মধ্যে থাকা তিনজন জোর করে গাড়ির ভিতরে ঢুকিয়ে নিয়েছিল। কালো কাপড় দিয়ে আমার মুখ ও চোখ বেঁধে দেয় ওরা। হেঁড়িয়া মাতঙ্গিনী নার্সিংহোমের কিছুটা দূরে আমার সঙ্গে আরও একজনকে আটকে রাখা হয়েছিল। একটি ধারাল অস্ত্র দেখতে পেয়েছিলাম। সেই অস্ত্র দিয়ে হাতে বাঁধা দড়ি কেটে আমরা দুজনেই পালিয়ে আসি।” কিশোরের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ওই কিশোরকে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছে হেঁড়িয়া তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ আধিকারিক। এখনও অবধি কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।