নন্দীগ্রাম: নির্ধারিত সময়ে রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর সভা শেষের পরই বিজেপি নেতাদের এলাকা ছাড়ার নির্দেশ পুলিশের। অভিযোগ তুলল বিজেপি। ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর ‘অপারেশান সূর্যোদয়’ হয়। তার ১৬তম বর্ষপূর্তিতে নন্দীগ্রামের গোকুলনগর করপল্লি শহিদ বেদিতে শহিদ শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেন শুভেন্দু অধিকারী।গত ৭ তারিখ নন্দীগ্রাম থানায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে এদিনের শহিদ দিবসের রূপরেখা তৈরি হয়। ১০তারিখ সকাল ৮ টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি (বিজেপির সময়)। আর তার পর সকাল ১০টার পর থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয় পুলিশে পক্ষ থেকে। এদিনের সকালের ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির মুখ্য বক্তা ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু এদিন সমস্যায় পড়ে বিজেপি ও ভূমি আন্দোলনের নেতৃত্ব। সভামঞ্চে পৌঁছতে দেরি হয় শুভেন্দু অধিকারীর। মুখ্য বক্তা এত দেরি করে আসছেন, এই কারণ দেখিয়ে পুলিশ বার বার বিজেপি কর্মীদের নির্ধারিত সময় সম্পর্কে অবগত করাতে থাকে বলে অভিযোগ।শুভেন্দু সভাস্থলে যান ৯:৪৫মিনিটে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সকাল ১০টার পর আর কর্মসূচি চালানোর অনুমতি ছিল না বিজেপির। নন্দীগ্রামে সেই সময়সীমা না-মানার অভিযোগ উঠল শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। বিরোধী দলনেতা ভাষণ শেষ করতেই এক প্রকার বিজেপি নেতা-কর্মীদের এলাকা ছাড়তে নির্দেশ দেন খোদ আই সি নন্দীগ্রাম এবং ‘শহিদ দিবসের’ মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেয় পুলিশ! যদিও সময়ে সভা শেষ না করার এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, নন্দীগ্রামে রাজনৈতিক জমি ফিরে পাওয়ার আশায় ২০০৭ সালের ১০ নভেম্বর ‘সূর্যোদয়’ অভিযানের ডাক দিয়েছিল রাজ্যের তৎকালীন শাসক দল সিপিএম। সে দিনের অভিযানে প্রাণ গিয়েছিল জমি আন্দোলনের এক ঝাঁক নেতা-কর্মীর। এখনও নিখোঁজ বেশ কয়েক জন। তার পর থেকে প্রতি বছর এই দিনটিতে নন্দীগ্রামের করপল্লিতে ‘শহিদ স্মরণ’ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কিন্তু ২০২০ সালে শুভেন্দু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পর থেকেই করপল্লিতে কর্মসূচির আয়োজন করা নিয়ে উত্তেজনার পারদ চড়ে নন্দীগ্রামে।
গত বছরের মতো পাশাপাশি দুই মঞ্চে ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটি লেখা থাকলেও এমন আবারও দ্বন্দ্বে জড়ায় তৃণমূল এবং বিজেপি। বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, পুলিশ তো শাসকদলের দলদাস। নির্দিষ্ট সময়ের দেরিতে নেতা এসেছেন। কোনও কাজে আটকে গিয়েছিলেন। তা বলে সময়েই শেষ হয়েছে সভা। কিন্তু পুলিশকে দিয়ে সরানোর প্রয়োজন ছিল না। এ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম ১ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলেন, “বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটাই করা হয়েছে। আমাদের দশটার সময়ে সভা করার কথা ছিল। আমরা যখন গিয়েছিলাম, তখন দেখি বিজেপির কয়েকজন কর্মী তখনও থেকে গিয়েছেন। পুলিশ সরিয়ে দিয়েছে। এই নিয়ে আমাদের কোনও বক্তব্য নেই।”