পূর্ব মেদিনীপুর: ত্রাণ বিলি করতে গিয়ে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট (Electrocution) হয়েছিলেন ৭ জন। তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয় ২ জনের। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন ৫ জন। পূর্ব মেদিনীপুরের (Purbo Medinipur) ভগবানপুরের ইটাবেড়িয়া অঞ্চলে সেই নিহত ও আহতদের পরিবারকে অর্থ সাহায্য করল তৃণমূল।
গত মঙ্গলবার বিকেলে কেলেঘাই নদীর বাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়ে পড়ে পটাসপুর, চণ্ডীপুর ও ভগবানপুর এলাকা। এই পরিস্থিতিতে গত ২০ তারিখ ভগবানপুর বিধানসভার ইটাবেড়িয়া অঞ্চলে বন্যা বিপর্যস্ত এলাকায় ত্রাণ বিলি করতে গিয়েছিলেন কয়েকজন যুবক। জলে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন সাত জন।
তাঁদের মধ্যে মৃত্যু হয় দু’জনের। আশঙ্কাজনক পাঁচ জন। ঘটনায় জেলা জুড়ে নামে শোকের ছায়া। মৃত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারের পাশে দাঁড়ায় রাজ্যের শাসকদল।
বৃহস্পতিবার ভাগবানপুরে যান তৃনমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার জেলা সভাপতি তরুণ মাইতি। এদিন তিনি দলের তরফে মৃত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারের হাতে সংগঠনের পক্ষ থেকে তুলে দেন আর্থিক সাহায্য। ভগবান পুর দুই ব্লকের ইটাবেড়িয়া অঞ্চলে মৃতদের জন্য ৫০ হাজার এবং আহতদের জন্য ১০ হাজার টাকা করে প্রাথমিক অর্থ সাহায্য করেন। নিহত ও আহতদের পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাসও দেন তৃণমূল সভাপতি ।
টানা দুর্যোগে বাড়ছে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা। গত তিনদিনেই মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। বুধবারই খড়দহে বাড়িতেই বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক প্রৌঢ়ের। তার আগের দিন অর্থাত্ মঙ্গলবার খড়দহে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় একই পরিবারের তিন সদস্যের। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় খড়দার পাতুলিয়াতে নিজেদের বাড়িতে জমা জলেই বিদ্যুত্স্পৃষ্ট দম্পতি ও তাঁদের কিশোর ছেলের। খড়দহের ই সরকারি আবাসনে নিজের স্ত্রী ও দুই পুত্রকে নিয়ে থাকতেন বছর চল্লিশের রাজা দাস। কিছুদিন ধরেই বৃষ্টির জেরে আবাসনের ভেতরেও জল জমেছে। জমা জলেই এদিন ঘরের মধ্য়েই বাড়ির কোনও কাজে বিদ্যুত্ সংযোগ করতে গিয়েছেল রাজা। সেইসময়ে তিনি বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হন। স্বামীকে বাঁচাতে ছুটে আসেন স্ত্রী পৌলমী। তিনিও বিদ্যুত্স্পৃষ্ট ( Electrocution) হন। মা-বাবাকে বাঁচাতে আসেন বছর এগারোর শুভ দাস। সেসময় খাটের ওপর বসেছিল তার ছোট ভাই। কিন্তু, মা-বাবাকে বাঁচাকে গিয়ে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয় শুভও।
দমদমে মতিঝিল কলোনিতে বাড়ির সামনেই বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় দুই কিশোরীর। পড়তে যাচ্ছিল তারা। রাস্তায় উল্টোদিক থেকে আসা একটি গাড়িকে পাশ কাটাতে গিয়ে বিদ্যুতের পোস্ট ধরে ফেলে এক কিশোরী। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু হয় দু’জনেরই। এছাড়াও খড়দহে আরও দুই ব্যক্তির মৃত্যু, মালদায় এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু ভয় ধরিয়েছে। বিদ্যুত্ দফতরের কর্মীরাও বারবার সচেতন করছেন। তবে এইভাবে রাস্তায় কত পোস্ট বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে, তা নিয়ে চিন্তায় প্রশাসনিক কর্তারা। দুর্যোগে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন: Parnasree: রাস্তার ওপর আচমকাই ছিঁড়ে পড়ল ৪৪০ ভোল্টের তার, দুর্যোগের মধ্যেই পর্ণশ্রীতে বড় ঘটনা