হলদিয়া: প্রকল্প প্রতি তৃণমূল নেতার (TMC Leader) আর্থিক দুর্নীতির খতিয়ান তুলে ধরে পোস্টার (Poster) ছড়াল পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায় (Haldia)। কোন রাজনৈতিক দল এই পোস্টার ছড়িয়েছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। কোনও নেতার ‘অনুগামী’ কিনা তাও স্পষ্ট নয়। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (CM Mamata Banerjee) দুর্নীতিগ্রস্ত নেতার বিরুদ্ধে তদন্তের আর্জি জানানো সেই পোস্টারের তলায় লেখা, ‘এমএ পাশ করে পান চাষ করছি’। বৃহস্পতিবার সকালে হলদিয়া ব্লক জুড়ে ছড়িয়ে পড়া এমন সব পোস্টার ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল।
সংশ্লিষ্ট পোস্টারে হলদিয়া পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূলের সভাপতি ও অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি (Corruption)- এর অভিযোগ আনা হয়েছে। হলদিয়া ব্লক জুড়ে সেই পোস্টার ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে জোর চাপানউতোর। হলদিয়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুব্রত কুমার হাজরা এবং বাড় উত্তর হিংলি অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি বুদ্ধদেব মণ্ডলের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির পড়েছে পোস্টার।
সেই পোস্টারে লেখা, পাইপলাইনের কাজ থেকে অবৈধ ইটভাটা নির্মাণে অনুমোদন দেওয়া, বালিচুরি থেকে ঢালাই রাস্তা থেকে তোলাবাজি, এমন একাধিক দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন ওই তৃণমূল নেতারা। সাধারণ মানুষের উন্নয়ন হয়নি। তার পর পান বরোজের কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ করে তার পুরো খতিয়ান তুলে ধরা হয়েছে পোস্টারে।
এখানেই শেষ নয়, সেই পোস্টারে লেখা উপপ্রধান রাম জানা, জনৈক আজানুর ত্রাণের ১০ কুইন্টাল গম-ও ‘খেয়ে’ নিয়েছেন। দুর্নীতির তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি দেওয়া হোক। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানানো হয়েছে এই পোস্টারে। তবে পোস্টারের নিচে লেখাটি বেশ অভিনব। লেখা রয়েছে, ‘সৌজন্যে: হলদিয়া ব্লক পানবোরজ চাষী বৃন্দ, এমএ পাশ করে পান চাষ করছি।’ (বানান অপরিবর্তিত)
এদিকে শাসক দলের এই দুই নেতার বিরুদ্ধে এমন পোস্টার নিয়ে খোঁচা দেওয়ার সুযোগ ছাড়েনি বিজেপি। তাদের বক্তব্য, “দলটার নাম তৃণমূল। যা দুর্নীতির পাঁকে ডুবেই আছে সেই দলের নেতা-জনপ্রতিনিধি কি ভাবে স্বচ্ছ হতে পারেন! তাই তদন্তের দাবি উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে।” তবে পোস্টার কারা দিয়েছে তা তারা বলতে পারছেন না।
আবার হলদিয়া গ্রামীণের সিপিএম সম্পাদকের কথায়, “গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে হলদিয়া ব্লকে তখনকার তৃণমূল কংগ্রেসের শুভেন্দু অধিকারীর কথাতে বিরোধী শূন্য করতে নেমে পড়েছিল তাদের নেতারা। বিরোধী শূন্য করলে দাদা পাঁচ কোটি টাকা দেবে, তাই হলদিয়া ব্লকে কোনও প্রার্থীকে নমিনেশন করতে দেওয়া হয়নি। সে কারণে বিরোধী শূন্য পঞ্চায়েত।” তার পর তিনি যোগ করেন, “সর্বত্রই খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে, তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান থেকে পঞ্চায়েত সভাপতির বিরুদ্ধে। পোস্টার, মারধরের ঘটনা ঘটছে। এটাও তেমনি।”
এদিকে দুই নেতার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছে, তাঁদের মধ্যে সুব্রত কুমার হাজরার প্রতিক্রিয়া, “বলার কিছু নেই। এটা পরিকল্পিত চক্রান্ত। এর আগেও একবার হয়েছিল। তবে সেটা মানুষ বেশি খায়নি। যে অভিযোগ প্রমাণ করতে পারেনি। তাই আমাকে ও আমার দলকে কালিমালিপ্ত করতে এসব করছে। এর কোনও ভিত্তি নেই।” পাশাপাশি তাঁর দাবি, দলের অন্দর এবং বাইরে কিছু মানুষের চক্রান্তে এসব করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Baruipur Murder: এক মেয়েকেই পছন্দ দু’জনের, তাই সরতেই হল এক জনকে! মর্মান্তিক পরিণতি যুবকের