Subal Manna: শিশিরবাবু একদিন তাঁকে টিকিট দেননি, সেই সুবলই ‘অধিকারী’ দখলমুক্ত করতে চলেছেন কাঁথির কুর্সি
Kanthi: ১৯৮৫ সাল থেকে রাজনীতির ময়দানে রয়েছেন সুবল মান্না। প্রথমে কংগ্রেসে ছিলেন।
পূর্ব মেদিনীপুর: একটানা ৩৭ বছর। সেই তখন থেকে রয়েছেন সুবল মান্না। একসময় শিশির অধিকারী তাঁকে টিকিট দেননি। তবুও হাল ছাড়েনি তিনি। বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হয়ে জিতে নিয়েছিলেন কাউন্সিলর পদ। আজও অজেয় তিনি। অধিকারী গড়ে এবার পেতে চলেছেন কাঁথির কুর্সি।
সেই আটের দশক থেকে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক যাত্রা। কখনও গাড়ি স্লথ গতিতে এগিয়েছে, কখনও আবার ছুটেছে। তবে থেমে থাকেনি। কথা হচ্ছে এক পোড় খাওয়া রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বর। সুবল মান্না। এবার কাঁথি পুরসভার কুর্সিতে তিনিই বসতে চলেছেন।
সদ্য প্রকাশিত হয়েছে এই রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার ফলাফল। সবুজ ঝড়ে পর্যুদস্ত হয়েছে বিরোধীরা। রাজের অধিকাংশ জায়গায় ফুটেছে ঘাসফুল। তবে কে কোথায় চেয়ারম্যান হচ্ছেন তা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর জল্পনা। ১০৮টি পুরসভার মধ্যে কিছুটা হলেও রাজনীতিবিদদের আলাদা নজরে রয়েছে কাঁথি। কারণ হাইভোল্টেজ কাঁথিতে এবার শুরু হয়েছে নতুন অধ্যায়। দীর্ঘ চার দশকের অধিকারী গড়ে এবার পুরসভার চেয়ারম্যান হয়ে বসতে চলেছেন সুবল মান্না।
কে এই সুবল মান্না?
কাঁথির রাজনীতিতে বর্ষীয়ান রাজনীতিক। ৩৭ বছর ধরে কাউন্সিলর তিনি। এই বছর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দাঁড়িয়েছিলেন। আর প্রতিবারের মতই এইবারও জিতেছেন।তাঁর অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে কাঁথিতে এবার রাজনীতির নতুন পথ খুলতে চায় শাসকদল।
রাজনীতিতে কবে পদার্পণ?
১৯৮৫ সাল থেকে রাজনীতির ময়দানে রয়েছেন সুবল মান্না। প্রথমে কংগ্রেসে ছিলেন। তারপর নির্দল বর্তমানে তৃণমূলের সক্রিয় নেতা। আটের দশকের আগে থেকেই ক্লাব রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সুবল বাবু। প্রথমে কাঁথি কুমারপুর সেবক সমিতি, লোটাস ক্লাব, মন্দাকিনি ক্লাব পরে কুমারপুর মহিলা পরিচালিত দুর্গোৎসব কমিটির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি।
একাধারে রাজনীতিক ও শিল্পী
শুধু ক্লাব নয়, সুবলবাবু একদিকে যেমন বর্ষিয়ান রাজনীতিক তেমনই দারুণ শিল্পী। ১৯৫৮ সালে জন্ম সুবল মান্নার। বাবা অচিন্ত্য মান্না রেশন ডিলার ছিলেন। পরিবারিক ওই ব্যবসা এখনও রয়েছে। ১৯৯৫ সাল থেকেই প্যাণ্ডেল ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। বড়-বড় মণ্ডপ তৈরি করে একাধিক পুরস্কারও জিতে নিয়েছেন সুবল বাবু। বর্তমানে ওই ব্যবসা দেখাশোনা করেন ওনার ছেলে।
রাজনৈতিক কেরিয়ার ১৯৮৫ সাল। কংগ্রেসের হয়ে দাঁড়ান তিনি। জেতেন। কাউন্সিলর হিসেবে প্রথম সেদিন থেকেই যাত্রা শুরু।
পরবর্তী পুরভোট অর্থাৎ ১৯৯০ সালে দাঁড়ান বাম সমর্থিত নির্দল প্রার্থী হিসেবে। কারণ তৎকালীন সময়ে শিশির অধিকারী কংগ্রেসের হয়ে টিকিট দেননি তাঁকে। সেই কারণে কিরণময় নন্দর সোসালিস্ট পার্টির সমর্থনে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নির্দল প্রার্থী হয়ে দাঁড়ান তিনি। এবারও জেতেন। কিন্তু এতসবের পরও শিশিরবাবুর হাত ছাড়েননি। এক কথায় তাঁর অনুচর হয়েই থাকতেন।
সালটা ১৯৯৫। তখন কাঁথির পৌর রাজনীতিতে অরাজনৈতিক মঞ্চ হিসেবে নাগরিক কমিটি ছিল বড় ফ্যাক্টর। প্রায় তখন থেকেই শিশিরবাবুর সঙ্গী ছিলেন সুবল। পরে তৃণমূল কাউন্সিলর। এখনও তাই। কিন্তু বিধানসভা ভোটের সময় অধিকারীরা পথ পরিবর্তন করলেও সেই ডাক প্রত্যাখ্যান করেছেন সুবল। অন্তত তেমনটাই দাবি তাঁর।
তবে, চেয়ারম্যান হওয়া নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে সুবল মান্নার সাফ জানান, “আমি যে চেয়ারম্যান তা আমি এখনও জানি না। দলের তরফে আমাকে এখনও কিছু জানানো হয়নি। আজ নিমতৌড়িতে এক বৈঠক আছে। আমাদের মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ডেকেছেন। আমি এখনও চেয়ারম্যান কী সাধারণ কাউন্সিলর জানি না।”
আরও পড়ুন: Contai Municipality: চার দশকে এই প্রথম কাঁথিতে খর্ব ‘অধিকারীর’ অধিকার, এবার চেয়ারম্যান সুবল মান্না