মেদিনীপুর: ৫৩ বছরে পা দিলেন রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। আজ, শুক্রবার তাঁর জন্মদিন। আর নেতার জন্মদিন ঘিরে কর্মী সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে। কালী মায়ের কাছে পড়ল শয়ে শয়ে পুজো। নেতার মঙ্গল কামনা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিজেপি কর্মী সমর্থক ও অনুগামীরা পুজো দিলেন কালী মন্দিরে। তেমনই ছবি ধরা পড়ল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার বটতলার চক কালীমন্দিরে পূজো দিল বিজেপির নেতাকর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি শঙ্কর গুছাইত সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।
মেদিনীপুরে পারদ ১০-এর নীচে। ঠান্ডা উপেক্ষা করেই ভোর থেকে কালী মন্দিরের বাইরে লাইন। হাতে পুজোর ডালা নিয়ে অপেক্ষায় কর্মী সমর্থকরা। বিজেপি নেতা শঙ্কর গুছাইত বলেন, “বাংলার লড়াইয়ের অন্যতম মুখ। বঙ্গ বিজেপির অন্যতম অধিনায়ক। আমরা প্রার্থনা করলাম, কুশাসনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য ভগবান যেন তাঁকে আরও শক্তি দেন। বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে আমাদের কুশাসন থেকে মুক্তি দিতে পারেন শুভেন্দুই।”
১৯৭০ সালে ১৫ ডিসেম্বরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন শুভেন্দু। কাঁথি তখন অবিভক্ত মেদিনীপুরে। রাজনীতির ছায়াবৃত্তি বেড়ে উঠায় রাজনীতিই পেশা-নেশা হয়ে ওঠে শুভেন্দুর। স্কুল জীবন শেষ করার পরই ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে পড়েন শুভেন্দু। পরবর্তীতে কাঁথি পৌরসভার কাউন্সিলর হন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একনিষ্ঠ কর্মী ছিলেন শুভেন্দু। নন্দীগ্রাম আন্দোলন অর্থাৎ নন্দীগ্রাম ভূমি উচ্ছেদ প্রতিরোধ কমিটির মুখ ছিলেন। ২০০৭ সালে নন্দীগ্রাম গণহত্যার পর তিনি তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রভাবশালী সিপিআইএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠকে ১.৭৩ লক্ষ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। দীর্ঘদিন ধরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন। সুদৃঢ় সাংগঠনিক ক্ষমতায় অবিভক্ত মেদিনীপুরে তাঁর একচ্ছত্র ‘রাজ’ ছিল। মেদিনীপুর এককথায় শুভেন্দুর ওপরেই ছেড়েছিলেন মমতা।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সেই সম্পর্কের অবনতি হয়। ২৭ নভেম্বর ২০২০ সালে শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের মন্ত্রী সভা থেকে ইস্তফা দেন। এরপর ১৬ ডিসেম্বর তিনি বিধানসভায় গিয়ে বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দেন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ১৭ ডিসেম্বর তিনি তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে তৃণমূলের সমস্ত সদস্য পদ ছেড়ে দেন। একুশের নির্বাচন তিনি আবার তাঁর প্রাক্তন নেত্রীর বিরুদ্ধে লড়ে জয়লাভও করেন। নির্বাচন কমিশনের কাছে দেওয়া হিসাব অনুযায়ী শুভেন্দু অধিকারীর বর্তমানে স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির মোট মূল্য ৯০ লক্ষ ৬ হাজার ১৪৯ টাকা ৩২ পয়সা।