কাঁথি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) তথা তৃণমূলকে (TMC) ধারাবাহিক আক্রমণ শানিয়ে আসছেন শুভেন্দু অধিকারী। (Suvendu Adhikari)। তবে শনিবার বড়দিনের বিকালে যেন আরও বেশি আক্রমণাত্মক, আরও বেঁশি চাঁচাছোলা আক্রমণ শানালেন তাঁর পুরনো দলকে। বললেন, তৃণমূলের কোনও রাজনৈতিক জ্ঞান নেই। একসময় মমতা মন্তব্য করেছিলেন, তিনি গুন্ডা কন্ট্রোল করেন। আর এদিন শুভেন্দুর মন্তব্য, “আমি লক্ষ্মণ শেঠ, কিষেণজিকে হারানো লোক, আমি বড় বড় গুন্ডা…”।
এদিন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর জন্মদিবস পালন করে বিজেপি। কাঁথির সেই অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন শুভেন্দু। সেখান থেকে তিনি বলেন,
“কাঁথি জেহাদীদের মুক্তাঞ্চল হয়েছে। আমি অর্বাচীনদের বলব- আমার ছবি তো অনেক দিন ধরে ছিঁড়ছেন। গত ডিসেম্বর মাস থেকে আমার ছবি ছিঁড়ছেন। তাতে আমার আপত্তি নেই। ওই হাত দিয়ে একদিন লাগাতে হবে আমার ছবি। আমি অপেক্ষায় আছি। পৃথিবীটা গোল”।
শুভেন্দু যোগ করেন, “যে পুলিশ আমার দিকে নন্দীগ্রামে বন্দুক তাক করত, পরে স্যালুট দিত। এখন আপনাদের লাগিয়ে দিয়েছে। আমি জন্মঠিকুচি, পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত জানি (পড়ুন তৃণমূল)। সব জানি। এটা মনে রাখবেন অটলজি না থাকলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হত না।”
নন্দীগ্রামের বিধায়ক মন্তব্য করেন, “আমার ডায়েরিটা চন্দ্রগুপ্তের ডায়েরি। ডেট, তারিখ দিয়ে সব লেখা আছে। একদম হিসাব করে করে আমি তুলি। কখনও দশ বছর লাগে, আট বছর, কখনও ছ’ বছর লাগে”। “আমি লক্ষ্মণ শেঠ, কিষেণজিকে হারানো লোক, আমি বড় গুন্ডা এদের থেকে বড় বড় গুন্ডা। আর এদের মালিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি হারিয়েছি”। তিনি আরও বলেন, “১৯৮৬ সালে শিশিরবাবুকে পুরসভা ভোটে একবার মোস্তাফাবাবু হারিয়ে দিয়েছিলেন। আমার মাথায় ছিল। আমি ভেবে রেখেছিলাম মোস্তাফাবাবুকে হারাব। নয় বছর পর মোস্তাফাবাবু পুরভোটে বললেন, ‘আমি ভোট বয়কট করলাম। ৯ বছর পর আমি পরীক্ষা দিয়েছি।”
তার পর শুভেন্দুর সংযুক্তি, “সুস্থ রাজনীতি করুন। কাঁথি চৌরঙ্গী মোড়-মেটিয়াবুরুজ সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড-টা পার্ক সার্কাস বানিয়েছে তৃণমূল”। তাঁর কটাক্ষ, “রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী দু’ বারে পাশ করেছে। আমি একবারে বিরোধী দলের নেতা। জ্যোতি বসু, রাজীব গান্ধী আমাদের হারাতে পারেনি। আমি ভয় পাওয়ার লোক নয়। আমার নামে একাধিক মামলা করেছে।” তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে মন্তব্য, “বিরোধী নেতাদের শত্রু নয়, প্রতিপক্ষ নয়”। আবার পুরভোট প্রসঙ্গে দলকে চাঙ্গা করতে গিয়ে শুভেন্দুর মন্তব্য, “আপনারা ভয় পাচ্ছেন? কবে কী নির্বাচন হবে বড় কথা নয়, নিজের গণতান্ত্রিক অধিকার পালন করুন। দায়িত্বটা শুভেন্দু অধিকারীর।” নিজের গড় বাঁচাতে মরিয়া বিজেপি নেতার আরও সংযুক্তি, “সবে তো সিসিটিভি দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। কে ঢুকছে, কে ভোট দিচ্ছে সব ফুটেজ পাওয়া যাবে। বাকি তো সেন্ট্রাল ফোর্সের দরকার। সব হবে।” তবে এখন শুভেন্দুর গুন্ডা-মন্তব্যে তৃণমূল কী প্রতিক্রিয়া দেয় সেটাই দেখার।