Teachers’ Day Special: ৭ বছর আগে অবসর নিলেও আজও পিছু ডাকে স্কুল! বেতন ছাড়াই নিয়ম করে নিয়ে চলেছেন ক্লাস
Teachers' Day 2025: এই প্রাথমিক স্কুলে মোট চারজন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১১৭ জন। প্রি-প্রাইমারি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত চলে পড়াশোনা। স্কুলের অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে এখনও বাচ্চাদের নিরলসভাবে পড়িয়ে চলেছেন তৃপ্তি দেবী।

পূর্ব মেদিনীপুর: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য। ঝড় উঠছে রাজনীতির আঙিনায়। কে যোগ্য আর কে অযোগ্য, তা নিয়ে তুফান উঠছে চায়ের ঠেকে। দুর্নীতির অভিযোগে সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েই চলেছে বিরোধীরা। এরই মাঝে সম্পূর্ণ অন্য চিত্র ধরা পড়ল তমলুকের খোস্টিকরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এখানকার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষিকা তৃপ্তি বক্সি। অবসর নিয়েছে ২০১৮ সালে। তারপরেও দীর্ঘ সাত বছর ধরে বিনা পারিশ্রমকে আসছেন স্কুলে। পড়াচ্ছেন।
গোটা স্কুলে পড়ুয়া একশোরও বেশি
এই প্রাথমিক স্কুলে মোট চারজন শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ১১৭ জন। প্রি-প্রাইমারি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত চলে পড়াশোনা। স্কুলের অন্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে তালে তাল মিলিয়ে এখনও বাচ্চাদের নিরলসভাবে পড়িয়ে চলেছেন তৃপ্তি দেবী। আগে ওই স্কুলের শিক্ষকতা করেছেন দীর্ঘদিন। বর্তমানে পেনশন পেলেও এই পাঠদানের কোনও পরিশ্রমিক তিনি নেন না। উল্টে বাচ্চাদের পড়ানোর মধ্যেই যেন নিজের আনন্দ, ফেলে আসা নিজেকে খুঁজে পান তিনি। এক মুখ হাসি নিয়ে নিজেই বলছেন সে কথা।
এখনও প্রতিদিন সকাল দশটায় স্কুলে আসেন। যদি কোন শিক্ষিকা অনুপস্থিত থাকেন, তাহলে তাঁকে ফোনও করেন। খোঁজখবর নেন। ঘড়ির কাঁটা যখন বলে দেয় বিকেল ৪টে বেজে গিয়েছে তখন ফের ধরেন বাড়ির পথ। গোটা চাকরি জীবনে মাত্র ১১টা ছুটি নিয়েছেন। চাকরি ছাড়ার পরেও নেই অ্য়াবসেন্ট মার্ক। শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে তিনি যেন হয়ে উঠেছেন গোটা সমাজের অনুপ্রেরণা।
‘উনি শিক্ষক সমাজের কাছে একটা বড় অনুপ্রেরণা’
তাঁকে পেয়ে খুশি তমলুক খোস্টিকরি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুমিত সামন্তও। বলছেন, “আজ যখন সমাজে শিক্ষকদের আর আগের মতো জায়গা নেই সেখানে তিনি সত্যিই একজন ব্যতিক্রমী মানুষ। ২১০৮ সালে অবসর নিলেও রোজ নির্দিষ্ট সময় স্কুলে আসেন। ক্লাস নেন রুটিন মেনেই। উনি গোটা সমাজ, শিক্ষক সমাজের কাছে একটা বড় অনুপ্রেরণা।” অন্যদিকে তৃপ্তি দেবী বলছেন, “আমার বাড়ির লোক সবসময় আমার পাশে আছে। আমার স্কুল, স্কুলের শিক্ষক, পড়ুয়ারাও আমার কাছে সব। ওদের কাছ থেকে সবসময় সাপোর্ট পাই।”
