পূর্ব মেদিনীপুর: কোথাও সবুজের রমরমা। কোথাও লাল ঝান্ডার ঘুরে দাঁড়ানো। কোথাও রাম-বাম জোটের জয়জয়াকার। ‘নন্দকুমার মডেলের’ সাফল্য-ব্যর্থতার ছবি ধরা পড়ছে পূর্ব মেদিনীপুরের একাধিক সমবায় নির্বাচনে। এবার আরও একটি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটে দেখা গেল ঘাসফুলের দাপট। এগরা ১ নম্বর ব্লকের নেগুয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটে ১২টি আসনের সবগুলিতে জিতলেন তৃণমূল প্রার্থীরা।
গত বছরের ৯ নভেম্বর নন্দকুমারের ‘বহরমপুর কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড’-র নির্বাচনে তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোট গড়েছিল বাম-বিজেপি। আর সেই জোটের কাছে হার মেনেছিল রাজ্যের শাসকদল। তবে নীচুতলার কর্মীদের এই জোটকে খারিজ করেন বাম নেতারা। তারপরও জেলায় একাধিক সমবায় নির্বাচনে নন্দকুমার মডেলকে সামনে রেখে জোট করে বাম-রাম। সব জায়গায় অবশ্য তাতে সাফল্য আসেনি। তারপরও বিভিন্ন জায়গায় জোট গড়ে লড়াই করেছেন নীচুতলার বিজেপি ও বাম কর্মীরা। আবার ২ দিন আগে ভগবানপুরের কলাবেড়িয়া কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটে জয়ী হন বাম সমর্থিত প্রার্থীরা। ৯টি আসনেই জয়ী হয় বামেরা। ওইদিনই কোলাঘাটের ঝেকুড়কুল সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে খাতাই খুলতে পারেনি বাম-বিজেপি জোট। ১২টি আসনের মধ্যে সবকটিতেই জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস।
আজও নেগুয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির ভোটে জোট গড়েছিল বাম-বিজেপি। এদিন ভোট প্রক্রিয়া সকাল ১০টায় শুরু হয়। চলে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এই কৃষি উন্নয়ন সমিতির মোট ভোটার ৯০৭ জন। আসন সংখ্যা ১২ টি।
প্রতিটি আসনেই তৃণমূল ও বিজেপি-বাম জোট তাদের প্রতিনিধি দিয়েছিলেন। বামেরা ৪টি আসনে ও বিজেপি ৮টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল। গণনার সময় দেখা যায় ১২টি আসনেই তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ করেছে। স্বাভাবিকভাবে জয়লাভ করার পরে ঘাসফুল শিবিরের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। জয়লাভের পরে সবুজ আবিরে নিজেদের রাঙান শাসকদলের কর্মীরা। পথচলতি মানুষদের মিষ্টি মুখ করানো হয়।
এদিনের জয়লাভের ফলে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বাড়তি অক্সিজেন পেল শাসকদল। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি তরুণ মাইতি বলেন, রাম-বাম জোটকে পরাজিত করেছে তৃণমূল। অশুভ আঁতাত মানুষ বুঝে গিয়েছে। এই অনৈতিক জোটকে মানুষ পরবর্তী ভোটগুলিতে পরাস্ত করবে।
তৃণমূলের এই জয়কে গুরুত্ব দিতে চাইল না গেরুয়া শিবির। বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সহ সভাপতি অসীম মিশ্র বলেন, এই জয়ের কোনও কৃতিত্ব নেই তৃণমূলের। নিজেদের দলের লোককে ওই সমিতির সদস্য করেছে শাসকদল। এই জয়ের কোনও প্রভাব পড়বে না কোনও নির্বাচনে।