নন্দীগ্রাম: নন্দীগ্রামের মহম্মদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান হয়েছেন শেখ সুফিয়ানের জামাই শেখ হাবিবুল। বিজেপির সমর্থন নিয়েই কি তিনি পঞ্চায়েত বোর্ডের প্রধান হয়েছেন? এমন প্রশ্ন গতকাল থেকেই উঠতে শুরু করেছিল। কারণ সেখানে পঞ্চায়েতের আসন সংখ্যা রয়েছে ১৮। তৃণমূল জিতেছিল ১২টি আসন। বাকি ছ’টি আসন বিজেপির। এদিকে তৃণমূলের তরফে দু’জন প্রধান পদপ্রার্থী ছিলেন। সেক্ষেত্রে হাবিবুল কীভাবে ১২ ভোট পেয়ে গেলেন প্রধান পদের জন্য ভোটাভুটিতে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল নন্দীগ্রামে তৃণমূলের অন্দরেই। আর এসবের মধ্যেই শুক্রবার সন্ধেয় তৃণমূলের নন্দীগ্রাম-১ ব্লক অফিসের সামনে তুমুল বিক্ষোভ দলের কর্মী-সমর্থকদের একাংশের। শেখ সুফিয়ানের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকরা।
তৃণমূলের অপর প্রধান পদপ্রার্থী ছিলেন শাহনওয়াজ আলি খান। এদিন শাহনওয়াজকে প্রধান পদে বসানোর দাবিতে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, ‘যিনি দলের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রধান হয়েছেন, তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে। যাঁরা দলবিরোধী কাজ করেছেন, তাঁদের প্রত্যেককে দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে।’ এদিন ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনার পরও পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারছেন না তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, ব্লক নেতৃত্ব থেকে তাঁদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, ১৪ তারিখের মধ্যে বিষয়টির সমাধান করা হবে। তা নাহলে দলত্যাগের হুঁশিয়ারিও দিয়ে রেখেছেন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মী ও সমর্থকরা।
এদিকে ইতিমধ্যেই মধ্যেই প্রকাশ্যে এল পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন ঘিরে দুই দলের হুইপ। দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার তরফে নির্দেশ ছিল প্রধান পদের জন্য অপর পদপ্রার্থী শাহনওয়াজ আলি খানকেই সমর্থন করার জন্য। আবার বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার তরফে নির্দেশ ছিল শেখ হাবিবুলকে সমর্থন করার জন্য।
এদিকে শুক্রবার সন্ধের এই বিক্ষোভ প্রসঙ্গে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গও মেনে নিচ্ছেন এই সমস্যার কথা। বলছেন, ‘যাঁকে প্রধান করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তাঁর বিপক্ষে কয়েকজন সদস্য মত দিয়েছেন। একইসঙ্গে সব বিজেপি সদস্যরা নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে দলগত ও সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করেছেন। এদিন কর্মীদের দাবি-দাওয়া গুরুত্ব দিয়ে শোনা হয়েছে এবং উর্ধ্বতন নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
শুক্রবারের বিক্ষোভ নিয়ে শেখ সুফিয়ান বা তাঁর জামাইয়ের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি। তবে গতকাল শেখ হাবিবুলের যুক্তি ছিল, ১২ জন তৃণমূলের সদস্য রয়েছেন, ফলে তিনিই প্রধান হয়েছেন। অর্থাৎ, বোঝাতে চেয়েছিলেন দলের সদস্যদের ভোটেই তিনি প্রধান হয়েছেন। অন্যদিকে শেখ সুফিয়ানও বিজেপির সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিলেন গতকালই। তাঁর দাবি ছিল, কারও বলার ক্ষমতা নেই তিনি বিজেপির সঙ্গে যোগসাজশ করছেন। কারণ, বিজেপির যাবতীয় লড়াই তাঁর বিরুদ্ধেই।