WB Panchayat Polls 2023: পঞ্চায়েতের টিকিট দেওয়া হল না নন্দীগ্রামে মমতার ‘ছায়াসঙ্গী’ শেখ সুফিয়ানকে

TV9 Bangla Digital | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Jun 15, 2023 | 2:33 PM

WB Panchayat Polls 2023: সুফিয়ানের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এমনকি নবজোয়ার কর্মসূচিতেও তাঁদের দূরে সরিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছিল। এই পরিস্থিতি নন্দীগ্রামে শাসক শিবিরের 'কোন্দল' এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিশেষ ফ্যাক্টর।

WB Panchayat Polls 2023: পঞ্চায়েতের টিকিট দেওয়া হল না নন্দীগ্রামে মমতার ‘ছায়াসঙ্গী’ শেখ সুফিয়ানকে
শেখ সুফিয়ান

Follow Us

নন্দীগ্রাম: তিনি জমি আন্দোলনের প্রথম সারির নেতা। তিনিই ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট। সেই তিনি অর্থাৎ শেখ সুফিয়ানের আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী তালিকায় নাম নেই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নন্দীগ্রাম লড়াইয়ের ‘কারিগরের’ নাম না থাকায় রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রকাশ্যে কিছু না বললেও, কার্যত ঘুরিয়ে দলের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ান। তাঁর অনুগামীরাও প্রকাশ্যে শীর্ষ নেতৃত্বের দুর্নীতিগ্রস্তদের পাশে থাকা ও আইপ্যাকের বিরুদ্ধে টাকা নিয়ে টিকিট বণ্টনের অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের সরগরম নন্দীগ্রাম।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রথমে শেখ সুফিয়ান ও পরে তাঁর অনুগামীদেরও টিকিট না দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। সুফিয়ানের অনুগামীরা নির্ধারণ নমিনেশন করেন। দলের অন্দরে যে ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে, তা আঁচ করতে পারেন শীর্ষ নেতৃত্ব। দলের নেতাদের মানভঞ্জনে আসরে নামেন তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ। রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশক্রমে কুণাল ঘোষ আবারও বৈঠকে বসেন। সেখানেই সুফিয়ানকে টিকিট দেওয়ার কথা জানায় রাজ্য নেতৃত্ব। তাতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন সুফিয়ানের বিরোধী গোষ্ঠীরা।

নন্দীগ্রামে তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় পার্টি অফিসে তালা বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে রাতেই ঘটনাস্থলে হাজির হন কুণাল ঘোষ। তাঁকে ঘিরেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ক্ষুব্ধ তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের একাংশ। সূত্রের খবর, রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশক্রমে শেখ সুফিয়ানের টিকিট ফের বাতিল করে দেন কুণাল ঘোষ। জেলা পরিষদে শামসুর আলমকে টিকিট দেওয়া হয়। এরপরই বৃহস্পতিবার নতুন করে নন্দীগ্রামে উত্তেজনা ছড়ায়। খোদ নন্দীগ্রামে তৃণমূল নেতা শেখ সুফিয়ান প্রকাশ্যে খুব উগরে দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের সামনেই তিনি বলেন, “দল আর আমার দেখার দায়িত্ব নেই। দল দেখার দায়িত্ব আইপ্যাড ও সিআইডি-র।”

তিনি আরও বলেন, “কাদের লোক গন্ডগোল করেছে মিডিয়া দেখেছে। টিকিটের জন্য তৃণমূলের দলীয় অফিসে তালা বন্ধ করে নোংরামি করেছে। আমি মনে করি দলের ভাব মূর্তি নষ্ট হয়েছে। আমার সঙ্গে কুণালবাবু আলোচনা করেন। দল নির্দেশ দেয়, নমিনেশন করবে না। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এক নিষ্ঠ সৈনিক।”

তাঁর অভিমান, “কে চুরি করল, কে ডাকাতি করল, কে বিজেপি করল, কে পদে এসে বসল, আমি এ কথা বলব না। দলের আইপ্যাক আছে, আইবি, সিআইডি আছে, খোঁজখবর নিয়ে নিবে। এটা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। দল জিতলে আমি খুশি, দল হারলে আমার চোখের জল পড়বে। ২০০১ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের যুক্ত হওয়ার পর সিপিএমের হাতে মার খেয়েছি। আমার কোনও কষ্ট নেই।”

শেখ শামসুল আলম বলেন ” দলের নির্দেশকে সম্মান জানাই। দল যখন এমন নির্দেশ জারি করেছে, তাহলে সব রকমের খোঁজখবর নিয়ে পার্টি ঘোষণা করেছে। প্রকৃত কর্মীদের আওয়াজকে দল গুরুত্ব দিয়েছে। এলাকায় উন্নয়ন করা আমার মূল লক্ষ্য।”

নন্দীগ্রামের আন্দোলনের পর দীর্ঘ প্রায় দেড় দশক। নন্দীগ্রামের ইতিহাস বলছে, ওই এলাকায় শাসকদলের সাংগঠনিক ভিত দেখভাল করার গোটা দায়িত্বই ছিল সুফিয়ান, আবু তাহের, স্বদেশ দাসদের মতো নেতাদের ওপর। নন্দীগ্রামে একুশের নির্বাচনে শেখ সুফিয়ানই ছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সহযোগী। মমতার হার ও একুশের নির্বাচনের পর শেখ সুফিয়ান ও আরও অনেক নেতাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ উঠেছে। সুফিয়ানের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। এমনকি নবজোয়ার কর্মসূচিতেও তাঁদের দূরে সরিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছিল। এই পরিস্থিতি নন্দীগ্রামে শাসক শিবিরের ‘কোন্দল’ এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিশেষ ফ্যাক্টর।

Next Article