পূর্ব মেদিনীপুর: ‘কে বলে ঠাকুমা তোমার বয়স পেরিয়েছে আশি…’, গানের এই লাইনটি মনে আছে? যদিও এখানে ঠাকুমা নন, এখানে কথা হচ্ছে একজন বৃদ্ধের। বয়স যে একটা সংখ্যা সেকথা শম্ভুনাথ সাহু প্রমাণ করলেন আরও একবার। ৮৫ বছর বয়সী এই বৃদ্ধ এখন রোদে পুড়ে-জলে ভিজে তৃণমূলের ঝান্ডা হাতে বাড়ি-বাড়ি প্রচারে যাচ্ছেন। পৌঁছে দিচ্ছেন মমতার বার্তা।
কুড়ি বছর বয়স থেকে রাজনীতিতে হাতে খড়ি শম্ভুনাথ সাহুর। ডানপন্থী ঘরানা থেকে উঠে এই নেতা প্রথমে কংগ্রেসে ছিলেন পরে তৃণমূলের হয়ে দীর্ঘদিন রাজনীতি করেছেন। এইবার পঞ্চায়েত ভোটে ঘাসফুলের তরুণ তুর্কিদের মতো তিনিও প্রার্থী।
সালটা ১৯৬২। সেই সময় থেকে রাজনীতিতে পা শম্ভুনাথের। মূলত জাতীয় কংগ্রেসের আদর্শে ও বিশিষ্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী সুশীল কুমার ধাড়া আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে রাজনীতিতে আসা তাঁর। ১৯৮৮ সালে গ্রাম পঞ্চায়েতে লড়েন শম্ভুনাথ। জয়লাভও করেন। এরপর ১৯৯৩ সালে তিনি প্রধান হন। সেই শুরু হল পথ চলা। কখন গ্রাম পঞ্চায়েত কখনও আবার পঞ্চায়েত সমিতিতে জমপেশ লড়াই দিয়েছেন তিনি। হার কখনও মানেননি।
২০০১ সালে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শকে সামনে রেখে তৃণমূলে যোগদান করেন শম্ভুবাবু। এরপর তৃণমূলের টিকিট হাতে নিয়ে কখনো গ্রাম পঞ্চায়েত কখনো পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হয়েছেন। এইবার আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির ৮ নম্বর আসনে ঘাসফুল শিবিরের হয়ে পঞ্চায়েত সমিতিতে দাঁড়িয়েছেন। শুধু দাঁড়াননি, জয়ের ব্যাপারেও আশাবাদী শম্ভু।
একদিকে যখন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নব জোয়ারের’হাত ধরে তৃণমূলের বহু যুব নেতারা নির্বাচনের টিকিট পেয়েছেন, যা নিয়ে বিস্তর জলঘোলা হচ্ছে। সেই জায়গা ৮৫ বছরের এই বৃদ্ধের উপর ফের ভরসা রেখেছে দল।
শম্ভু সাউ শুধু রাজনীতিবিদ নন, এর পাশাপাশি তিনি শিক্ষকও। টানা তিরিশ বছর ধরে সাধারণ-প্রান্তিক মানুষের পাশে থেকে কাজ করেছেন। নবীন প্রবীণ দের মেলবন্ধনের মাধ্যমে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাজিমাত করতে চায় তৃণমূল। এখন দেখার আগামী ১১ ই জুলাই শম্ভু বাবু তাঁর রাজনৈতিক জীবনের অধ্যায় ভোটে জেতার মার্জিন বাড়াতে পারেন কি না ?