পূর্ব মেদিনীপুর: আবাস যোজনা (Awas Yojona) ঘিরে জেলায় জেলায় শাসকদলের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ উঠছে। এই অভিযোগকে সামনে রেখেই শুক্রবার নন্দকুমারে পথে নামে সিপিএম। আবাস যোজনা দুর্নীতি নিয়ে নন্দকুমারের বিডিও অফিসে ডেপুটেশন দিতে যান তারা। এরইমাঝে ধুন্ধুমার কাণ্ড এলাকায়। নন্দকুমার থানার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন সিপিএম নেতা পরিতোষ পট্টনায়ক, জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহিরা। নিরঞ্জন সিহিকে দলীয় কার্যালয় থেকে গ্রেফতারের অভিযোগ ওঠে। যদিও এই গোটাপর্ব ঘিরে কার্যত তুলকালাম চলে এদিন নন্দকুমারে। সিপিএমের অভিযোগ, তাদের নেতা কর্মীদের গায়ে হাত তোলে পুলিশ। লাঠিচার্জেরও অভিযোগ ওঠে। পাল্টা পুলিশের উপরও হামলার অভিযোগ ওঠে। এক মহিলাকে কাপড় টেনে, চুলের মুঠি ধরে মারধরের অভিযোগ ওঠে মহিলা পুলিশের বিরুদ্ধে। লিখিতভাবে অভিযোগ জমা পড়লে সমস্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তমলুকের এসডিপিও শাকিব আহমেদ। এদিকে বাম নেতৃত্বের উপর হামলার অভিযোগে শনিবার জেলাজুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেয় সিপিএম।
আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে এদিন নন্দকুমার বিডিও অফিসে স্মারকলিপি দিতে যান সিপিএম কর্মী সমর্থকরা। বিডিও অফিসে ডেপুটেশন দিতে গিয়ে গেটের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ ওঠে সিপিএমের কর্মীদের বিরুদ্ধে। সিপিএম কর্মীরা মহিষাদল নন্দকুমার রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বলে অভিযোগ। দীর্ঘক্ষণ অবরোধের জেরে তৈরি হয় ব্যাপক যানজট। এরপরই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ।
পুলিশ অবরোধ তুলতে গেলে সিপিএম কর্মী ও পুলিশের সঙ্গে বচসা বাধে বলে অভিযোগ। অভিযোগ ওঠে, পরিস্থিতি সামাল দিতে নন্দকুমার থানার পাশাপাশি সংলগ্ন থানা থেকেও পুলিশ এসে পৌঁছয়। পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ হয়ে যায় এলাকা। অভিযোগ, এরপরই অবরোধ তুলতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। অবরোধকারী এক মহিলা কর্মীকে জোর করে টেনে তোলা হয় বলে অভিযোগ বামেদের।
পাল্টা বেশ কয়েকজন নন্দকুমার থানার পুলিশও জখম হন। এরপরই নন্দকুমার থানার পুলিশ সিপিএম নেতা পরিতোষ পট্টনায়ক, জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি-সহ সাত সিপিএম কর্মী-সমর্থককে প্রথমে আটক করে। পরে গ্রেফতার করা হয় নিরঞ্জন সিহিদের। ঘটনাস্থলে যান তমলুক মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শাকিব আহমেদ। আহত পুলিশ কর্মীদের উদ্ধার করে স্থানীয় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়।
শাকিব আহমেদ বলেন, “শুক্রবার বিকেলে নন্দকুমার বিডিও অফিসে সিপিএমের স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি ছিল। আবাস যোজনা নিয়ে ডেপুটেশন দিতে এসেছিল। ওরা খুবই উত্তেজিত ছিল। এদিকে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য পুলিশও মোতায়েন ছিল। পুলিশের সামনে বিডিও অফিস ভাঙচুর করার চেষ্টা করে। বাধা দিলে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। ৫ জন পুলিশ কর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।” এক পুলিশ কর্মীর চোখে গুরুতর আঘাত লাগে।
জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “কার দোষ, কে ঠিক তা তো এরকম হিংস্র আন্দোলনের মাধ্যমে হয় না। এতে ঘাত প্রত্যাঘাতই হয়, পুলিশ আহত হয়।” অন্যদিকে জেলা বিজেপি সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “রাজ্যে যে গণতন্ত্র যে নেই এটা তার প্রমাণ। গণতান্ত্রিক আন্দোলন হলে দলদাস পুলিশ এভাবে কাজ করে।”