কলকাতা: পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) নন্দকুমারের ঘটনা ঘিরে রাজনৈতিক পারদ চড়ছে। শনিবার জেলাজুড়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে সিপিএম। এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে নির্মমতার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। সোচ্চার হয়েছেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীও। আবাস যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগ তুলে শুক্রবার নন্দকুমারে প্রতিবাদ কর্মসূচি ছিল সিপিএমের। অভিযোগ, নন্দকুমার বিডিও অফিসে স্মারকলিপি জমা দিতে গিয়ে বিডিও অফিসের গেটে বিক্ষোভ দেখান সিপিএমের কর্মীরা। এরপরই সিপিএম কর্মীদের বিরুদ্ধে মহিষাদল নন্দকুমার রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ ওঠে। রাজ্য সড়কে বিক্ষোভের জেরে কার্যত তা অচল হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নন্দকুমার থানার পুলিশ। এরপরই পুলিশের সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে সিপিএমের নেতা, কর্মীরা। জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহিকে দলীয় কার্যালয় থেকে গ্রেফতারের অভিযোগও ওঠে। নন্দকুমার বিডিও অফিসের অভিযানের ঘটনায় ১৮ জনকে গ্রেফতার করা হয় বলে অভিযোগ। এরমধ্যে নিরঞ্জন সিহি,পরিতোষ পট্টনায়েক-সহ ৮ জনকে ব্যক্তিগত জামিনে মুক্তি দেন।
একইসঙ্গে সিপিএমের মহিলা কর্মীদের মারধর, পোশাক ধরে টানা হেঁচড়ার অভিযোগ ঘিরে সরব হয় বামেরা। পাল্টা পুলিশ অভিযোগ করে, সিপিএমের লোকজন তাদের উপর আক্রমণ করে। এ ঘটনা প্রসঙ্গে মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য, ‘ নন্দকুমারে আবাস যোজনায় দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিডিও অফিসে বিক্ষোভ চলাকালীন পুলিশের নির্মম লাঠিচার্জে আহত বহু কমরেড। পরবর্তীতে পার্টি অফিস থেকে জেলা সম্পাদক ও সম্পাদকমণ্ডলী-সহ বেশ কয়েকজন কমরেডকে ধরপাকড় করা হয়েছে। রাজ্যজুড়ে এর প্রতিবাদ হওয়া প্রয়োজন অবিলম্বে। প্রতিটি ক্ষেত্রে আবাস যোজনার দুর্নীতি নিয়ে সোচ্চার হওয়া মানুষের উপর পুলিশি অত্যাচার নামিয়ে আনছে তৃণমূল সরকার। এর বিরুদ্ধে সর্বত্র প্রতিবাদ হোক। দুর্নীতি বিরোধী চলমান আন্দোলনের উপর পুলিশের এই নির্মম আচরণ জনগণের সামনে আবারও স্পষ্ট করে তুলে ধরা প্রয়োজন।’
অন্যদিকে সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘আবাস যোজনায় দুর্নীতির প্রতিবাদে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে সিপিআই (এম)-এর ডাকে বিডিও অফিস অভিযানে পুলিশের বর্বরোচিত আক্রমণ করেছে। মহিলাদের উপর নির্বিচারে লাঠি চলেছে। পার্টি অফিস থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় পার্টির জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি-সহ কর্মী সমর্থকদের।’ যদিও এই ঘটনা প্রসঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, “কার দোষ, কে ঠিক তা তো এরকম হিংস্র আন্দোলনের মাধ্যমে হয় না। এতে ঘাত প্রত্যাঘাতই হয়, পুলিশ আহত হয়।”
যদিও তমলুক মহকুমা পুলিশ আধিকারিক শাকিব আহমেদের বক্তব্য, “ওরা খুবই উত্তেজিত ছিল। এদিকে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য পুলিশও মোতায়েন ছিল। পুলিশের সামনে বিডিও অফিস ভাঙচুর করার চেষ্টা করে। বাধা দিলে পুলিশের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। ৫ জন পুলিশ কর্মী গুরুতর জখম হয়েছেন। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি।”