পূর্ব মেদিনীপুর: নিয়োগ কেলেঙ্কারি মামলায় এখনও অবধি যতগুলি নাম নিয়ে প্রবল কাটাছেড়া চলছে, বেশির ভাগই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হেফাজতে। একমাত্র গোপাল দলপতি (Gopal Dalpati), যিনি এখনও সিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদের মুখেই আছেন। তবে ইতিমধ্যেই গোপাল সম্পর্কে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে সিবিআইয়ের হাতে। গোপাল তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে পার্টনারশিপে একটি সংস্থা খুলেছিলেন। সেই সংস্থায় রাশি রাশি টাকার লেনদেন হয়েছে বলেও সিবিআই সূত্রে খবর। শুধু তাই নয়, সূত্রের দাবি, এই গোপাল দলপতির মুম্বইয়ের নরিম্যান পয়েন্টে অফিসও ছিল। তবে বছর দুই আগে দিল্লি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হওয়ার পর সেসব ব্যবসার পাততাড়ি গোটানো শুরু হয়। কিন্তু এ হেন ‘ধনকুবের’র গোপালের পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের গ্রামের বাড়িটা কেমন, সেখানে কে কে থাকেন, খোঁজ নেয় টিভি নাইন বাংলা। কথা হয় গোপালের মা লক্ষ্মী দলপতির সঙ্গেও। ছেলের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ, মা তো ভাবতেই পারছেন না। বলছেন, তাঁর ছেলে নির্দোষ। ছেলেকে ফাঁসানো হচ্ছে। একইসঙ্গে লক্ষ্মীদেবীর দাবি, তাপস মণ্ডল বা কুন্তল ঘোষকে তিনি কোনওদিনই দেখেননি।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভগবানপুর-২ ব্লকের গড়বাড়ি-২ গ্রামপঞ্চায়েতের খিরিশবাড়ি গ্রামে বাড়ি গোপাল দলপতির। এটি ভূপতিনগর থানা এলাকায় পড়ে। যদিও গোপাল এ বাড়িতে থাকেন না প্রায় ২০-৩০ বছর। কলকাতায় দমদমে থাকেন তিনি, বলছেন মা। খিরিশবাড়িতে থাকেন বিধবা মা। জ্যেঠতুতো ভাই ও তাঁর পরিবার থাকলেও কয়েকদিন ধরে তাঁদেরও দেখা নেই। ফাঁকা একতলা বাড়িতে বসে রয়েছেন গোপাল দলপতির মা লক্ষ্মীদেবী।
গোপালের মা লক্ষ্মীদেবী জানান, ছেলে শিবরাত্রির দিন গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। পরেরদিন দুপুরে কলকাতায় ফেরেন। লক্ষ্মীদেবী জানান, গত কয়েকদিনে টিভিতে কী দেখছেন, কী হচ্ছে ছেলের কাছে জানতে চান। মায়ের প্রশ্নের উত্তরে গোপাল বলেন, “মা আমি ফেঁসে গিয়েছি। তাপস মণ্ডল ও কুন্তল ঘোষ আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমি কোনও টাকা নিইনি।” লক্ষ্মী দলপতি জানান, গোপাল কলকাতা যাওয়ার পর এক ব্যক্তি খুব আর্জেন্ট বলে একটা চিঠির মতন খাম দিয়ে গিয়েছিলেন। তবে সেখানে কী ছিলেন তিনি জানেন না বলেই জানান। তবে ছেলের সঙ্গে নিয়মিত কথা হয় মায়ের।
লক্ষ্মী দলপতি বলেন, ছেলে খোঁজ নেন নিয়মিত কারা বাড়িতে আসছেন। যেদিন ওই জনৈক খামে ভরা চিঠিটি দিয়ে যান, রাতেই গ্রামে ফিরেছিলেন গোপাল। খামটি নিয়ে রাতেই আবার বেরিয়ে যান। গোপালের গ্রামের বাড়িটি দেখে মনে হচ্ছে, কাজ চলছে। সিমেন্ট পড়েছে। এখনও পুরোপুরি কাজ হয়নি। আরও কিছুটা সময় লাগবে। তবে এই বাড়ি নিয়ে লক্ষ্মী দলপতির বক্তব্য, ছেলের কাছে টাকা নেই। সে কারণেই বাড়ির প্লাস্টার করার কাজও শেষ করা যায়নি। যা টাকা সব ওই কুন্তল, তাপসেরই, বলছেন মা লক্ষ্মী দলপতি। তাঁর ‘বাবু’ কিছুই জানে না।