পূর্ব মেদিনীপুর: নন্দীগ্রামে (Nandigram) ফের চড়ছে উত্তেজনার পারদ। শুক্রবার নন্দীগ্রামে তৃণমূলের এক মঞ্চে আগুন লেগে যায় বলে অভিযোগ ওঠে। সেই ঘটনার পরই জেলায় যান মন্ত্রী শশী পাঁজা, কুণাল ঘোষ। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের গোকুলনগরের করপল্লিতে তেখালি-নন্দীগ্রাম সড়কের উপর অবস্থান বিক্ষোভে বসেন তাঁরা। সেখানে কুণাল ঘোষ বলেন, এই ঘটনায় যুক্তদের আগামী তিনদিনের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে।
কুণাল ঘোষের কথায়, “যদি তিনদিনের মধ্যে দোষীদের গ্রেফতার না করা হয় তাহলে আইনের উপর আস্থা রেখেই বলছি আমরা কিন্তু নন্দীগ্রাম থানায় অনশনে বসব। এনআইএ, সিবিআইকে দিয়ে মিথ্যে মামলায় আমাদের ছেলেদের ডেকে ডেকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। আর এখানে হামলা হল, মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হল, আমরা কি ওদের রসগোল্লা ছুঁড়ব? দোষীরা ঘুরে বেড়াবে সেটা হবে না। আমরা মানব না।”
এদিন অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হন কুণাল ঘোষ, মন্ত্রী শশী পাঁজা, মন্ত্রী অখিল গিরি, মন্ত্রী শিউলি সাহা, তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র , শেখ সুফিয়ান-সহ ব্লক ও জেলা নেতৃত্ব। সেখানে নন্দীগ্রামবাসীর এই আন্দোলনে পাশে থাকার বার্তা দেন তাঁরা।
ঘটনার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। নন্দীগ্রামের গোকুলনগরের করপল্লিতে ১০ নভেম্বরের স্মরণসভায় তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র কুণাল ঘোষ-সহ অন্যান্য মন্ত্রী-বিধায়কদের সামনেই দলের একাংশ ক্ষোভে ফেটে পড়েন। দলেরই জেলা চেয়ারম্যান পীযূষ ভুঁইয়াকে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছিলেন তাঁরা। উত্তেজনা থামাতে ময়দানে নামতে হয় কুণাল ঘোষকে। এরপরই এদিন মঞ্চে আগুন লাগার ঘটনা।
কুণাল ঘোষ বলেন, “প্রশাসনের সঙ্গে আমরা আলোচনা করতে গিয়েছিলাম। ওরা ৭২ ঘণ্টা সময় চেয়ে নিয়েছে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের জন্য। বিজেপি বহিরাগতদের নিয়ে এসে এখানে রাতভর প্ররোচনা দিয়েছে। আমাদের মঞ্চ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। খুনের চেষ্টা করা হয়েছে গোপাল গায়েনকে। হুমকিও দেওয়া হয়েছে। প্রত্যেক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে হবে। অভিযুক্তরা হামলার সময় শুভেন্দু অধিকারী, মেঘনাদ পাল, অশোক করণ, স্বদেশ দাস অধিকারী-সহ যাদের নাম করেছে তাঁদের বিরুদ্ধেও খুনের চেষ্টার নির্দেশ বলে ১২০ বি ধারায় এফআইআর করতে হবে।”
অন্যদিকে মন্ত্রী শশী পাঁজা বলেন, “মুখোশ পাল্টায়, চরিত্র বদলায় না। ২০০৭ সালে যারা গণহত্যা সংগঠিত করেছিল, নন্দীগ্রামকে রক্তাক্ত করেছিল, তারা এখন বিজেপির আশ্রয়ে। বিভাজন নয়, সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়তে হবে। নন্দীগ্রামের আবেগ যেদিকে তৃণমূল সেদিকেই থাকবে।” যদিও বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “এসব তৃণমূলের সংস্কৃতি। আমি বলছি পুলিশ তদন্ত করুক, সবাইকে জেরা করুক। সত্যি বেরিয়ে আসবে। নিজেরাই আগুন লাগিয়ে এখন পথ অবরোধ শুরু করে নিজেদের ঐক্য দেখাতে চাইছে। ওদের ঐক্যর ছবি মুখ থুবড়ে পড়েছিল বৃহস্পতিবার শহিদ স্মরণের অনুষ্ঠানে।”