পূর্ব মেদিনীপুর: পাত্র পুলিশে কাজ করে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার ভার যাঁর ঘাড়ে, তিনি যে বাড়ির লোকের নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করবেন এমনই ভরসা ছিল মেয়ের বাবার। এখন সেই মেয়ের বাবা বলছেন, ভরসা করেই ভুল হল। বিয়ের পণ দিতে না পারায় পুলিশ কর্মী ও তাঁর পরিবার মেয়েকে মেরে ফেলেছে বলে অভিযোগ বাবার। অভিযোগ, পণের টাকা না পেয়ে যুবতীকে মারধর করে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। পরে মৃতদেহ হাসপাতালের বাইরে ফেলে চম্পট দেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এই মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে চালানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি থানার হইপুর গ্রামপঞ্চায়েতের এই ঘটনা। কাঁথি থানার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, “মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কাঁথি মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই এর বেশি কিছু বলা যাবে না।”
কয়েক বছর আগে কাঁথির আলালপুর গ্রামে ওই যুবতীর বিয়ে হয়। জামাই পুলিশে কাজ করেন বলে দাবি মেয়ের বাড়ির লোকজনের। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে নানা কারণে স্ত্রীর উপর নির্যাতন চালাতেন স্বামী। শারীরিক, মানসিক অত্যাচার চালাত শ্বশুরবাড়ির অন্যান্যরাও। এর মধ্যে একটি শিশুকন্যার জন্মও দেন ওই যুবতী। সেই মেয়ের বয়স এখন পাঁচ বছর। মেয়ের মুখের দিকে সবটাই মেনে নিচ্ছিলেন বলে যুবতীর বাপের বাড়ির লোকজনের দাবি।
অভিযোগ, বৃহস্পতিবার এই মানিয়ে নেওয়ার দাম দিতে হয় প্রাণ দিয়ে। ঘরের দরজা বন্ধ করে এদিন ওই যুবতীকে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে জোর করে মুখে বিষ ঢেলে দেন শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। অভিযোগ, শ্বশুরবাড়ির লোক আত্মহত্যা বলে ঘটনাটি চালাতে চেয়ে বিষ ঢেলেছিল মুখে। এরপরই বাড়ির বউকে হাসপাতালে ফেলে রেখে পালিয়ে যান তাঁরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে কাঁথি থানার পুলিশ।
মৃতের বাবা অভিযোগ করেন, “মেয়েকে খুন করে প্রমাণ লোপাটের জন্য ওর শ্বশুরবাড়ির লোকজন মুখে বিষ ঢেলে দিয়েছে। মেয়েটাকে হাসপাতালে ফেলে পালিয়ে যায় ওই শ্বশুরবাড়ির লোকজন। যদি আত্মহত্যা করে থাকে তাহলে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেল কেন? মেয়ের মৃত্যুর প্রকৃত তদন্ত চাই। আমার জামাই পুলিশে কাজ করে। সে কারণে মনে হচ্ছে তদন্তে গাফিলতি হতে পারে। আমি বারবার বলেছিলাম, যা পাওনা ঠিক দেব। তারপরও নিয়মিত মেয়েটাকে মারত। আমার এত আদরের মেয়ের এমন পরিণতি হবে ভাবতেই পারছি না।” যদিও অভিযুক্তদের কারও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।