পুরুলিয়া: জেট গতিতে ছুটছে রাজ্যের করোনা সংক্রমণ। করোনার বাড়বাড়ন্তের মাঝে ফের আংশিক লকডাউনের পথে হাঁটতে চলেছে রাজ্য সরকার এই পরিস্থিতিতে রবিবার সকালে হঠাৎ পুরুলিয়ার বড়হাটে হানা দিলেন জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। গেলেন পুরুলিয়া পৌরসভার এডমিনিস্ট্রেটর কাউন্সিলের চেয়ারপার্সন নবেন্দু মাহালীও। রবিবারের বাজারে তখন থিকথিকে ভিড়। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার কারণে অনেকে গোটা শরীর শীতবস্ত্রে ঢেকে রাখলেও দেখা যায় মাস্ক পরার দিকে নজর নেই বেশির ভাগেরই। জেলা শাসককে দেখে অবশ্য সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক পরতে শুরু করেন হাটে বাজার করতে আসা ক্রেতারা।
জেলাশাসক এদিন, মাস্কহীন ক্রেতাদের তিরস্কার করেন। আবার মাস্ক তুলেও দেন তিনি। পুরুলিয়া পৌরসভার পক্ষে রবিবার সকাল থেকেই সারা শহর জুড়ে শুরু হয়েছে কোভিড নিয়ে প্রচার। জেলা শাসক ও চেয়ারম্যান জানান পুরুলিয়ার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে এখন থেকেই সাবধান না হলে অবস্থা যে কোন সময় অত্যন্ত খারাপ হতে পারে। তাই প্রচারে জোর দিচ্ছেন তাঁরা।
জেলাশাসক রাহুল মজুমদারের কথায়, “করোনা যেভাবে বাড়ছে, তাতে কিছু কড়াকড়ি দরকার। সাধারণ মানুষ যেভাবে বিধি ভুলে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তা অত্যন্ত ভয়ানক। এভাবে সংক্রমণ রোখা যাবে না। তবে জেলার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে। আমরা সচেতনতা প্রচারও চালাচ্ছি। আশা করছি কোনও পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।”
সরকারি বুলেটিন অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল ৯ টা থেকে শনিবার সকাল ৯ টার মধ্যে কলকাতায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৩৯৮ জন। স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উল্লেখ্য, কত নমুনা পাঠানো হচ্ছে আর কত নমুনা পরীক্ষার পর পজিটিভ হয়ে আসছে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৯,৭৭৩। রাজ্যের করোনার মৃত্যু হার গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১.২০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪০ হাজার ৮১৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। পজিটিভিটি রেট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮.৪৬ শতাংশে। শুধু কলকাতায় পজিটিভিটি রেট ২০-র বেশি।
স্বাস্থ্যকর্তারা বলছেন, পরিসংখ্যানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি উল্লেখ্য, কত নমুনা পাঠানো হচ্ছে আর কত নমুনা পরীক্ষার পর পজিটিভ হয়ে আসছে। বৃহস্পতিবার দেখা গিয়েছে, ৬টি নমুনা পাঠানোর পর ৫ টি পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। তা থেকে কলকাতায় গোষ্ঠী সংক্রমণের ইঙ্গিত স্পষ্ট বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। অর্থাৎ বোঝাই যাচ্ছে, ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টকে ধীরে ধীরে সরিয়ে ওমিক্রন তার থাবা বসাচ্ছে। কলকাতায় টেস্ট ও পজিটিভিটি রেটও সমান হারে বাড়ছে।
শুক্রবার বৈঠকে বসে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন তৈরির ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে কলকাতা পুরনিগমে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, যদি একটি ফ্ল্যাটে ৫ জন করোনা আক্রান্ত হন, তাহলে ওই আবাসনকে মাইক্রো কনটেনমেন্ট জ়োন হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। ওই আবাসনের লিফট স্যানিটাইজ করতে হবে। আবাসনের সুইমিং পুল, জিম বন্ধ করে দেওয়া হবে। এখনও পর্যন্ত এরকম ১১ টি পয়েন্ট চিহ্নিত করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আরও পড়ুন: Sukanta Majumder on COVID19: ‘চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে…আরও আগে সচেতন হওয়া উচিত ছিল’