পুরুলিয়া: ৮৫ বছরে পড়েছেন পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়। একসময় তিনি ছিলেন সেনা কর্মী। আজ অবসর জীবন। বেশিরভাগ সময়টাই কাটে খবর শুনে। আর সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশের অশান্ত পরিস্থিতির কথা শুনেছেন তিনি। তাই কয়েকদিন ধরে তিনি বেশ উদ্বিগ্ন। একসময় দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন পুরুলিয়ার পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্য়ায়। যারা ভারতের দিকে আঙুল তুলছে, তাদের যদি উচিৎ শিক্ষা দিতে পারতেন!
বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য একসময় হাতে রাইফেল নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে ছুটে গিয়েছিলেন। আজ তিনি বলে ওঠেন, ‘ইচ্ছে হয় আবার যুদ্ধের ময়দানে দাঁড়িয়ে, আমাদেরকে যারা ভয় দেখায়, তাদেরকে উপযুক্ত শাস্তি দিই।’
বাড়িতে কাউকে না বলে ১৯৬৩ সালে পুরুলিয়া শহরে গিয়ে সেনাবাহিনীর পরীক্ষা দিয়েছিলেন পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়। পুরুলিয়া দু’নম্বর ব্লকের চয়নপুর গ্রামে তাঁর বাড়ি। ‘বেঙ্গল ইঞ্জিনিয়ার্স সেন্টার রুরকি বাহিনী’তে ২২ বছর বয়সে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। চাকরি জীবনে যুদ্ধে গিয়েছেন বেশ কয়েকবার। সৈন্য সেবা মেডেলও পেয়েছেন তিনি।
১৯৭১ সালের কথা তাঁর বেশ মনে আছে। ছুটিতে বাড়িতে ফিরেছিলেন তখন। সেনাবাহিনী থেকে হঠাৎ জরুরি তলব। যুদ্ধে যেতে হবে। তড়িঘড়ি ছুটে গিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম পেরিয়ে মেখলা নদী অব্দি এগিয়ে গিয়েছিলেন ল্যান্স নায়েক পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়। চোখের সামনে এখনও সেই সব স্মৃতি উজ্জ্বল। হাতে থাকত এলএমজি কিংবা থ্রি নোট থ্রি রাইফেল। চোখের সামনে দেখেছিলেন একটা দেশের স্বাধীনতা। আজ সেই দেশের অশান্ত পরিস্থিতি তাঁকে কষ্ট দেয়।
স্মৃতি আঁকড়ে পাঁচকড়ি বলেন, “এরা বেইমান। যারা এদের উপকার করেছে, তাদের প্রতিদান দিতে জানে না। ওদের কোনও জ্ঞান নেই, কোনটা এদের মা, কোনটা মেয়ে, কোনটা নিজের স্ত্রী। এরা কখনই পারবে না কলকাতা দখল করতে। তপস্যা করলেও পারবে না। ওরা জানে না ওরা কী ভুল করছে।”
কেন মহম্মদ ইউনূসকে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “ও একজন কট্টরপন্থী মুসলমান। কীভাবে শান্তি পুরস্কার পেল? একটা দেশের সঙ্গে যুদ্ধ লাগিয়ে দেব, এই ভাবনা ওর থাকা উচিৎ নয়।” তিনি মনে করেন, এই অবস্থার জন্য উচিৎ শিক্ষা পেতে হবে বাংলাদেশকে।