পুরুলিয়া: কাউন্সিলর খুনের তদন্তে বৃহস্পতিবার দুপুরেই ঝালদা যাচ্ছে সিবিআই টিম। এক ডিআইজি পদমর্যাদার অফিসারের নেতৃত্বে দলটি এদিন ঘটনাস্থল ঘুরে দেখবেন। সিবিআই-এর এই বিশেষ দলটির নজরদারিতে রয়েছেন জয়েন্ট ডিরেক্টর পদমর্যাদার এক অফিসার। বুধবারই জেলা পুলিশের থেকে কেস ডাইরি ও তদন্তের সব নথি হাতে নেবে সিবিআই। এলাকা ঘুরে দেখার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলবেন তাঁরা। মঙ্গলবারই জেলা পুলিশের কাছে এই মামলার এফআইআর কপি চাওয়া হয়। তার ভিত্তিতে মামলা রুজু করে সিবিআই। জেলা পুলিশ এখনও পর্যন্ত যে সব তথ্য প্রমাণ জোগাড় করেছে, তা সিবিআই হাতে নেবে। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে সমস্ত তথ্য জেলা পুলিশকে সিবিআই-এর হাতে তুলে দিতে হবে।
তবে সব থেকে উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হল, ঝালদার কাউন্সিলর খুনের তদন্তে যেদিন সিবিআই টিম প্রথম ঘটনাস্থলে পৌঁছবে, ঠিক তার আগের রাতেই অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় এই ঘটনার অন্যতম প্রধান প্রত্যক্ষদর্শীর। বুধবার ভোররাতে তপন কান্দু খুনের প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণবের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, সিবিআই তদন্তভার হাতে নেওয়ার পর থেকেই ক্রমশ নিরঞ্জনের ওপর চাপ বাড়াচ্ছিল শাসকদল। বারবার নিরঞ্জনকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ পরিবারেরও। চাপের মুখেই নিরঞ্জন আত্মহত্যা করেছেন বলে দাবি পরিবারের। যদিও হুমকির কথা অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
ঘর থেকে মিলেছে একটা সুইসাইড নোটও। সেখানে তিনি মানসিক চাপের কথা উল্লেখ করেন। চিঠিতে লেখা ছিল, তপন কান্দুর খুনের গোটা দৃশ্য তিনি চোখের সামনে দেখেছিলেন। মানসিক চাপ তিনি সহ্য করতে পারছেন না। তারপর পুলিশি হেনস্থার কথাও চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। যেহেতু তিনি ঘটনার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী, তাই পুলিশ তাঁকে বারবার থানায় ডেকে নিয়ে যেতেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলত জেরা। তাঁর সামাজিক জীবন একেবারেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল। মানসিক যন্ত্রণাতেই চরমতম সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন প্রতিবেশীরাও।
এটি কি আদৌ নিরঞ্জনের লেখা সুইসাইড নোট? তদন্তের স্বার্থে এই সুইসাইড নোটও পরীক্ষা করে দেখা হবে। পুলিশের চাপ নাকি অন্য কোনও চাপ, সিবিআই তদন্তের মুখে তিনি মুখ খুললে কি আরও অনেকের বিপদ হতে পারত? সেই প্রশ্নগুলিও থাকছে। নিরঞ্জনের অস্বাভাবিকের মৃত্যুরও প্রত্যেকটা বিষয় খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: তপন কান্দু খুনের প্রত্যক্ষদর্শীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, সুইসাইড নোটে বিস্ফোরক দাবি