পুরুলিয়া: ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করার অভিযোগ আগেই তুলেছিলেন বিজেপির বিরুদ্ধে। বলেছিলেন, ‘হিন্দু ধর্মের হ-ও জানেন না…’ কিন্তু এবার তিনি ভারত সেবাশ্রম, রামকৃষ্ণ মিশনের সাধু, মহারাজকে নিয়ে মন্তব্য করেছেন। যা নিয়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্গের কার্তিক মহারাজ। পুরুলিয়ায় বিজেপি প্রার্থী জ্যোতির্ময় মাহাতোর সমর্থনে এসে এবার মমতার সেই মন্তব্য নিয়েই মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শিক্ষা-দুর্নীতি, নোট উদ্ধার, নারী নির্যাতন-সব প্রসঙ্গে ছাপিয়ে মোদী বললেন, “তৃণমূল-মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সব সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সাধু-মহারাজদের প্রকাশ্যেই ধমকাচ্ছেন। মঞ্চ থেকেই হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। বিশ্ব জুড়ে ইসকন, মিশনের লোক থাকেন।”
মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধতে প্রধানমন্ত্রী তুলে আনেন স্বামী বিবেকানন্দর প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, “স্বামী বিবেকানন্দ বিদেশের মাটিতে গিয়েছিলেন, যখন ভারতের কথা বলতেন, তখন লাখো মানুষ ওঁর ভক্ত হয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু এক জন এমন ছিলেন, যিনি ভারতের প্রতি বিদ্বেষ ছিল, তিনি স্বামী বিবেকানন্দকে ধমকিয়েছিলেন, খুব অপমান করেছিলেন। এখন আবারও সেরকম হচ্ছে। আজ সেরকমই বাংলার মাটিতে হচ্ছে। নির্বাচনে বাংলার মানুষকে ভয় দেখানো, ধমকানো, হিংসা করানোর TMC সরকার এবার সব সীমা পেরিয়ে গিয়েছে।”
তিনি বলেন, “দেশে ইসকন, রামকৃষ্ণ মিশন, ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ নিয়ে পুরো বিশ্বে জনপ্রিয়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের প্রকাশ্যেই ধমকাচ্ছেন। মঞ্চ থেকেই হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন। বিশ্ব জুড়ে ইসকন, মিশনের লোক থাকেন। তাঁদের লক্ষ্য, মানুষের সেবা করা। নিজের ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করতে এখন তাঁদেরকেই ধমকাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। লাখো মানুষের ভাবনার কথা ভাবছেন না।”
প্রসঙ্গত, শনিবারের একটি সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী সরসারি ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজের নাম করে বিঁধেছেন। তিনি বলেছেন, “কেউ কেউ করেন না। সব সাধু সমান নয়। বহরমপুরের একজন মহারাজ আছেন। কার্তিক মহারাজ। আমি শুনেছি উনি বলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের এজেন্টকে বসতে দেব না। তাঁকে আমি সাধু বলে মনে করি না। তিনি সরাসরি রাজনীতি করছেন।”
আবার মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন আসানসোলের রামকৃষ্ণ মিশন নিয়েও। তিনি বলেছিলেন, “আসানসোলে একটি রামকৃষ্ণ মিশন আছে। সিপিএম যখন খাবার বন্ধ করে দিয়েছিল সেই সময় আমি পুরো সমর্থন দিয়েছিলাম আপনাদের। যেমন আমি শুনলাম আসানসোলে একটি মিশন আছে।”
ইসকন প্রসঙ্গেও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, “ইসকনকেও আমি ৭০০ একর জমি দিয়েছি। দিল্লি থেকে নির্দেশ আসে বলে বিজেপি-কে ভোট দেওয়ার জন্য বলো কেন করবেন সাধুসন্তরা এই কাজ? কিন্তু রামকৃষ্ণ মিশনকে সবাই শ্রদ্ধা করেন। ওদের কাছে একটা হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ আছে। ওদের আমি ভালবাসাতে পারি। কিন্তু ওরা ভোট দেয় না কখনও। আমি কেন তাহলে ওদের ভোট দিতে বলব। কেউ কেউ ভয়োলেট করছে সবাই নয়।” পরদিন বঙ্গে এসে মুখ্যমন্ত্রীকে সে বিষয়েই বিঁধলেন প্রধানমন্ত্রী।