পুরুলিয়া : দলের প্রার্থী থাকতে কেন নির্দলকে সমর্থন জানাবেন? এই ভাষাতেই মঙ্গলবার দলীয় কর্মীদের কড়া বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। কিন্তু, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সেই বার্তায় বিপাকে পড়েছেন পুরুলিয়া জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। ঝালদা পুরসভায় এবার ত্রিশঙ্কু হয়েছে। নির্দলের সমর্থন না পেলে বোর্ড গঠন করা সম্ভব নয়। তাই দলনেত্রী নির্দলের বিরুদ্ধে বার্তা দেওয়ায় চিন্তায় পড়েছেন জেলার নেতারা। ১০৮ পুরসভার শতাধিক আসনে তৃণমূল জয়ী হলেও চারটি পুরসভায় ত্রিশঙ্কু হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ঝালদা। এই পুরসভায় ১২টি আসনের মধ্যে তৃণমূল জিতেছে পাঁচটি আসনে, কংগ্রেস জিতেছে ৫টি আসনে। আর বাকি ২টি আসনে জয়ী হয়েছে নির্দল।
পুরুলিয়া ঝালদা পুরসভা কার হাতে যাবে, তা নির্ভর করছে একজন নির্দলের সমর্থনের ওপর। ওই পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে জয়ী হন বিক্ষুদ্ধ তৃণমূল সোমনাথ কর্মকার। দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য তাঁকে ছ বছরের জন্য সাসপেন্ডও করা হয়। নির্বাচনের ফল ঘোষণা হলে দেখা যায় ঝালদার মোট ১২ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫ টি আসন পেয়েছে তৃণমূল। ৮ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হন তৃণমূল থেকে বহিষ্কৃত সোমনাথ কর্মকার। ৩ নম্বর ওয়ার্ড থেকেও নির্দল প্রার্থী হয়ে জয়ী হন শীলা চট্টোপাধ্যায়।
ফল ঘোষণার পরই তৃণমূলের পতাকা ধরেন শীলা। এখনও তাঁর বক্তব্য, তৃণমূলের থেকে তিনি বহিষ্কৃতও হননি। আগে সেখানে তিনি ছিলেনও না। জেতার পর তৃণমূলে গিয়েছেন। এখন দল যা করবে সেটাই মানবেন তিনি। অন্যদিকে দলের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে সোমনাথ কর্মকারও জানান, তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তবে এখনও তিনি তৃণমূলের পক্ষে রয়েছেন। তাঁকে নেওয়া না হলে তিনি যে অন্য চিন্তা করবেন বলেও জানিয়েছেন।
কংগ্রেস থেকে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে স্বীকারও করেন সোমনাথবাবু। এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা চিন্তায় ফেলে দিয়েছে জেলা নেতৃত্বকে। ঝালদা পুরসভায় একজন নির্দল সরাসরি তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় এবং সাসপেন্ড হওয়া প্রাক্তন কর্মী আবার দলে ফিরতে চাওয়ায়, বোর্ড গঠন মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল তৃণমূলের। ম্যাজিক ফিগার ৭ চলে আসছিল তাদের হাতে। তবে মমতার ঘোষণার পর, বহিষ্কৃত সোমনাথ কর্মকারকে আপাতত দলে আর যে নেওয়া যাচ্ছে না, তা বুঝে গিয়েছে জেলা নেতৃত্ব। সরাসরি এ কথা অবশ্য বলতে চাননি কোনও নেতাই। তাঁরা রাজ্য কমিটির নির্দেশকেই চূড়ান্ত বলে জানাচ্ছেন।
এই বিষয়ে তৃণমূল নেতা সাধন বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, নেত্রীর নির্দেশই শেষ কথা। তা মেনেই কাজ করতে হবে। তাই বোর্ড গঠন কোন পথে হবে, তা শীর্ষ নেতৃত্বের ওপরেই নির্ভর করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন : West Bengal Assembly: বিধানসভায় রাজ্যপালের সামনে গন্ডগোলের জের, সাসপেন্ড দুই বিজেপি বিধায়ক