রঘুনাথপুর: বছর ঘুরলেই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন (Panchayet Election 2023)। আর তার আগে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সুর আরও চড়াতে শুরু করে দিয়েছে সিপিএম (CPIM) শিবির। এবার প্রকাশ্য সভা থেকে তৃণমূল শিবিরকে হুঁশিয়ারি দিয়ে রাখলেন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সুশান্ত ঘোষ (Susanta Ghosh)। বললেন, “এবার সময় এসেছে, গ্রামে যারা চুরি করে সম্পদের পাহাড় তৈরি করেছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে তাদের গলায় গামছা দিয়ে চুরির টাকা আদায় করা হবে। গরীব মানুষের টাকা বুঝিয়ে দিতে হবে। পালিয়ে যাওয়ার কোনও রাস্তা পাবে না।”
রবিবার রঘুনাথপুর ১ ব্লকের শাঁকা গ্রামের ফুটবল মাঠে ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের দ্বিতীয় পুরুলিয়া জেলা সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়েই এইভাবে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানালেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। সঙ্গে খোঁচার সুরে আরও বললেন, “তৃণমূলের সবাই চোর নয়, কিন্তু ছোট-বড়-সেজ সমস্ত নেতাই চোর। তৃণমূলের একজন নেতাকেও খুঁজে বের করতে পারবেন না, যিনি চুরির আওতার বাইরে আছেন।” এরপরই ‘চুরি করে সম্পদের পাহাড়’ তৈরির কথা বলেন সুশান্ত ঘোষ। সঙ্গে তৃণমূলকে কটাক্ষের সুরে বললেন, “দলের যিনি নেতা হন, তাঁকে টাকা দিয়ে পদ পেতে হয়। পঞ্চায়েতে,পুরসভা, বিধায়ক, সাংসদ সবই হতে হয় টাকা দিয়ে। সেই পদ পাওয়ার পর, কী করে তার থেকে আরও বেশি টাকা মজুত করতে পারে, তাই এদের দুর্নীতি করতে হয়।”
যদিও সুশান্ত ঘোষের এই মন্তব্যের পর পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তৃণমূলের নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতো। তিনি বলেন, “সুশান্তবাবু নিজে সাধারণ মানুষের জনরোষের থেকে বাঁচতে পালিয়েছিলেন। তাঁর কথার কোনও গুরুত্ব নেই। তৃণমূল শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে। সুশান্ত ঘোষের দলের কোনও অস্তিত্বই এখন আর নেই।” অর্থাৎ, সুশান্ত ঘোষের মন্তব্যকে বাড়তি গুরুত্ব দিতে চাইছে না জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া রাজনীতিক সুশান্ত ঘোষের এই মন্তব্য ঘিরে জেলার রাজনীতির অন্দরে বেশ শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাম আমলে প্রায়শই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠত বিরোধীদের হুমকি দেওয়ার। তবে তারপর এক যুগ পেরিয়ে গিয়েছে। টানা তৃতীয় বারের জন্য ক্ষমতায় রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কিন্তু এখনও যে সুশান্ত ঘোষ স্বমেজাজেই রয়েছেন, সেটাই যেন এদিনের সম্মেলন থেকে বুঝিয়ে দিলেন তিনি।