অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও রঞ্জিত ধর
পুরুলিয়া ও কলকাতা: বাঁকুড়া শেষ করে ‘নব জোয়ার’ যাত্রায় পুরুলিয়ায় রয়েছেন তৃণমূল সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek banerjee)। বুধবার পুরুলিয়ার শিমুলিয়ার অধিবেশন নিয়ে কুড়মি আন্দোলন নিয়ে বক্তব্য রাখেন তৃণমূল নেতা। কুড়মি আন্দোলনকারীদের বার্তা দেন বঞ্চনা নিয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার। আর এই লড়াইয়ে তাদের পাশে থাকবে তৃণমূল।
বুধবার অভিষেক বলেন, “আমাদের সরকার ২০১৭ সালে ক্যাবিনেটে রিজিলিউশন করে পাঠিয়েছিল। কোনও রাজ্য সরকার করেছে? কেউ করেনি। সেখানে পুরুলিয়ায় কুড়মি ভাইদের একাংশ মিথ্যে প্রোরোচনায় পা দিয়ে এদেরকে ভোট দিয়েছিল। আর এদের দলেরই নেতারা বলছেন কুড়মি ভাইদের জামাকাপড় খুলে দেব।” এর পাশাপাশি বলেন, “আপনারা আন্দোলন করুন। প্রয়োজনে দিলীপ ঘোষের বাড়ি ঘেরাও করুন। শপথ নিন যে একটা বিজেপি নেতাকে পুরুলিয়ায় প্রবেশ করতে দেব না। যা সমর্থন লাগবে আমি দেব। যেখানে বলবেন সেই লড়াইয়ে কাঁধ মেলাতে যাব। সমর্থন মানে গায়ে গতরে খাটব। আজকে যদি পুরুলিয়ায় ১১ লক্ষ জব কার্ড হোল্ডার হয় এদের মধ্যে ৩০ শতাংশ হোল্ডার কুড়মিরা হবেন। তিন লক্ষ কুড়মিরা নিজেদের অদিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এদের জন্য দিল্লিতে আন্দোলন করবেন না?”
বস্তুত, এসটি (ST) তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে সিআরআই (CRI) রিপোর্টের উপর রাজ্যের তরফে জাস্টিফিকেশন পাঠাতে হবে কেন্দ্রের কাছে। এই দাবিকে সামনে রেখে টানা আন্দোলন জারি রয়েছে কুড়মি জনজাতির মানুষদের। সাম্প্রতিক সময়ে দিনের পর দিন অবরুদ্ধ হয়েছে রেল চলাচল। কুড়মি আন্দোলনের জেরে জাতীয় সড়কে গড়ায়নি গাড়ির চাকা। রাজ্যের তরফে বৈঠকের ডাক পেয়েও আশানুরূপ ফল মেলায় কর্মীদের দেওয়ালে কোনও রাজনৈতিক প্রচার নয় বলে সম্প্রতি ফরমানও জারি করেছিল কুড়মি সংগঠন ঘাঘরগেরা কেন্দ্রীয় কমিটি। এমন উত্তপ্ত আবহের মধ্যেই আবার বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ বিতর্কিত মন্তব্য করেন কুড়মি আন্দোলনকারীদের একাংশের উদ্দেশ্যে। তাঁর সেই মন্তব্যের জন্য দিলীপ ঘোষের বাড়ি ঘেরাওয়ের ডাক দেন কুড়মি আন্দোলনকারীদের একাংশ। এমনকী বাড়ি ঘেরাও করেন তাঁরা। এই পরিস্থিতিতে আবার কুড়মিদের একাংশকে বিজেপি নেতার বাড়ি ঘেরাও করার পরামর্শ দিলেন অভিষেক।
পাল্টা প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিজেপি সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমার বাড়ি ঘিরে নিয়েছিল ওরা। কারা ইন্ধন জুগিয়ে ছিল সেটা পরিষ্কার হয়ে গেল। কুড়মিদের কয়েকজন নেতা তৃণমূলের দালাল। টাকা নিয়ে আন্দোলন করে বিজেপিকে আটকানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। পুরুলিয়া থেকে লোক আনা হয়েছিল। মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের কেউ ছিল না। এই লোকগুলোকে বাসে করে নিয়ে আসা হয়েছিল। বাসের ভাড়া কুড়ি থেকে ২৫ হাজার। সেটা কে দিয়েছিল যেটা আমি আগে বলেছিলাম। সেটাই প্রমাণিত। জঙ্গলমহলের মানুষ দিলীপ ঘোষ কেমন জানেন। সেটিং এর রাজনীতি বন্ধ করা উচিত। যাঁরা কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষকে ভুল পথে চালিত করছে তাদের থেকে সাবধান থাকুন।”