পশ্চিমবঙ্গ: সকাল থেকেই মুখ ভার আকাশের। কখনও ঝমঝমিয়ে কখনও বা মাঝারি কখনও আবার ছিটেফোঁটা বৃষ্টি হয়েই চলেছে। আজ প্রায় গোটা দিনটা কেটে গেল এই ভাবেই। পূর্বাভাস বলছে আপাতত আজ বৃষ্টি থামার কোনও লক্ষণ নেই। কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে পাঁচ জেলায় হবে রাতভর বৃষ্টি।
আজ শুধু কলকাতা নয় রাজ্যের একাধিক জেলায় বৃষ্টির ভোগান্তির শিকার হয়েছেন সাধারণ মানুষ। কোথাও কোথাও নদীর জলস্তর বেড়ে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক রাজ্যের বিভন্ন জেলার জলের ছবি:
কলকাতা: রাতভর বৃষ্টিতে জলমগ্ন শহরের একাধিক এলাকা। উত্তরে কলেজ স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া,পাতিপুকুর আন্ডারপাস থেকে দক্ষিণে ঢাকুরিয়া, সার্দান এভিনিউ যেদিকেই তাকানো যায় শুধু জল আর জল। কলকাতা বিমানবন্দরও জলের তলায়।যার জেরে চরম অসুবিধা হচ্ছে বিমান অবতরণে। সমস্যায় পড়েছেন যাত্রীরাও।
হাওড়া: একনাগারে বৃষ্টির জেরে জলের তলায় চলে গিয়েছে হাওড়া শহর। দিনভর ভারি বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। উত্তর হাওড়ার সত্যবালা আইডি হাসপাতাল চত্বর চলে গিয়েছে জলের তলায় । এদিকে, ভারী বৃষ্টিতে গঙ্গার জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় জল জমে যায় বেলুড় মঠ চত্বরেও। এছাড়া বেলুড় স্টেশন রোড, চাঁদমারি, বেলুড় স্টেশন রোডের সাবওয়ে এক কোমড় সমান জলে ডুবে যায়। অন্যদিকে, বৃষ্টির জেরে জল জমে যায় টিকিয়াপাড়া কারশেডে। ফলে সেখানে অনেক ট্রেন ধীর গতিতে চলতে থাকে। তবে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব রেলের হাওড়া ডিভিশনে কোনও ট্রেন বাতিল হয়নি।
হুগলি: হুগলিতে শ্রীরামপুর ধোবি ঘাটের পাশে একটি আবাসনের সীমানা পাঁচিল ধসে নেমে গেলো গঙ্গায়। গঙ্গা দর্শন নামে ওই আবাসনে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাট রয়েছে। সেখানে অফিস রয়েছে সাংসদের। টানা বৃষ্টিতে শ্রীরামপুরের গঙ্গার পার ভাঙছে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা : রাত থেকে শুরু হওয়া একটানা বৃষ্টিতে জলের তলায় চলে গিয়েছে বারুইপুর পৌরসভার ১৭ টি বিভিন্ন ওয়ার্ড। প্রায় প্রতিটি রাস্তায় হাঁটু সমান জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। পুর এলাকার ১১ নম্বর সহ একাধিক ওয়ার্ডে জল ঘরের মধ্যে ঢুকে পড়েছে। একই সাথে ভারি বৃষ্টির ফলে বারুইপুর জংশন রেল স্টেশনের রেল লাইন জলে ডুবে গিয়েছে। রেল চলাচলে বিঘ্ন ঘটার উপক্রম হয়েছে।
নিম্নচাপের জেরে অবিরাম ভারী বৃষ্টিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবন উপকূলেরও পরিস্থিতিও বিপর্যস্ত । তার উপর পূর্ণিমার কোটালের জন্য নদী ও সমুদ্রের জলস্তর বাড়তে শুরু করেছে। ফলে সুন্দরবন উপকূলে নদী ও সমুদ্র বাঁধের ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপের নীচু এলাকায় বৃষ্টির জল জমতে শুরু করেছে। সকাল থেকে মানুষ গৃহবন্দী। রাস্তায় যানবাহনের তেমন দেখা নেই। দোকানপাট অধিকাংশ বন্ধ।
আরও পড়ুন: জলছবি: তিলোত্তমায় পানিপথ! ভাঙল বাড়ি, উপড়ালো গাছ, ভাসছে নগরজীবন