শান্তিপুর: সকালেই হয়েছে ফলপ্রকাশ। পাহাড় প্রমাণ নম্বরের জোয়ারে খুশির হাওয়া পড়ুয়াদের মধ্যে। কিন্তু, তার মধ্যেও বাড়ল বিষাদের সুর। মাধ্যমিক পরীক্ষায় (Madhyamik Exam) অকৃতকার্য হওয়ায় রেল লাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক স্কুল ছাত্রী (School Girl)। ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার(Nadia) শান্তিপুরের ফুলিয়ার প্রফুল্ল নগর গ্রামে। এই ঘটনায় রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। পরিবার সূত্রে জানা যায়, শান্তিপুরের (Santipur) ফুলিয়ার বালিকা বিদ্যালয়ের মাধ্যমিক ছাত্রী মেঘা সরকার সকালবেলায় ইন্টারনেটে রেজাল্ট দেখার পরে বাড়ি থেকে স্কুলে রেজাল্ট আনতে যাচ্ছি বলে বেরিয়ে যায়। এরপর আর বাড়িতে আসেনি। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। বন্ধু-বান্ধবদের ফোন করেন পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু, মেঘা কোথায় সে বিষয়ে কেউই বিশেষ কিছু বলতে পারেননি।
এরইমধ্যে পরিবারের লোকজন খবর পায় বাড়ির কাছেই রেললাইনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে তাঁদের মেয়ে। খবর যায় রেল পুলিশে। তড়িঘড়ি রেললাইন থেকে মৃত স্কুল ছাত্রীর দেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায় রানাঘাট জিআরপি। সূত্রের খবর, দু’বছর আগে ওই স্কুলছাত্রীর বাবার রেলে কাটা পড়ে মারা যান। তারপর থেকেই কোনওরকমে সংসারের হাল ধরেন মেঘার মা। আর্থিক অনটকে সঙ্গী করেই চলছিল পড়াশোনার পাঠ। তাই মাধ্যমিক পাশের স্বপ্ন বুকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল মেঘা। কিন্তু, ফল প্রকাশ হতেই মনে নামে বিষাদের মেঘ। রেজাল্ট দেখা মাত্রই মেয়েটা কেমন যেন অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিল বলে জানাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা। যদিও তাই বলে যে এতবড় ঘটনা ঘটে যাবে তা টের পাননি কেউই।
এদিকে সদাহাস্য মেঘার মৃত্যুতে পরিবারের পাশাপাশি শোকের ছায়া নেমে এসেছে বন্ধু-মহলেও। তাদের কেউই মেঘার এই অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না। শোকে বিহ্বল মেঘার স্কুলের শিক্ষকেরা। পাশ-ফেল জীবনের অঙ্গ, কিন্তু তাই বলে একেবারে পার্থিব মায়া ত্যাগ করে মৃত্যুকে বেছে নেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত বছর ষোলোর এই পড়ুয়া কীভাবে নিল তা ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরাও। এদিকে, মাধ্যমিক হোক বা উচ্চমাধ্যমিক, অকৃতকার্য পড়ুয়াদের আত্মহত্যার ঘটনা নতুন নয়। তবে মনোবিদরা বলছেন, এ ধরনের ঘটনা ঠেকাতে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে পরিবারের সদস্যদের। পাশে থাকতে হবে বন্ধুদেরও। কারণ, খারাপ থাকার দিনের তাদের হাত ধরেই মন থেকে কাটতে পারে বিষাদের মেঘ।