হাওড়া: কোন্নগরে ৮ বছরের শিশুকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় জেলেই দিন কাটছে মা শান্তা শর্মার। চলছে মামলা। মায়ের সঙ্গেই গ্রেফতার হয়েছেন তাঁর বান্ধবী ইফ্ফাত পারভিন। উঠে এসেছে সমকামী সম্পর্কের তত্ত্বও। সম্পর্কে কী তবে পথের কাঁটা ছিল ছেলেই? সে কারণেই কী খুন? সেই প্রশ্নও জোরালো হয়েছে। এরইমধ্যে পুত্র খুনে এবার মাকে ফাঁসির শোনাল হাওড়ার ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। ফাঁসির সাজা তাঁর প্রেমিককেও। ঘটনার সূত্রপাত ২০১৬ সালের শুরুতে। জানুয়ারিতে হাওড়া স্টেশনে ফলকনামা এক্সপ্রেসে ট্রলি ব্যাগের মধ্যে থেকে একটি শিশুর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার করে হাওড়া জিআরপি। ঘটনায় শোরগোলও শুরু হয়েছিল বিস্তর। ঘটনার তদন্ত শুরু করে পুলিশ। তখনই সামনে আসে আসল ঘটনা।
সূত্রের খবর, স্বামীকে ছেড়ে প্রেমিকের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ি ছেড়েছিলেন হাসিনা সুলতানা। অন্ধ্রপ্রদেশের গুনটুর থেকে পালিয়ে প্রেমিক ভানু শাহর সঙ্গে চলে গিয়েছিলেন হায়দরাবাদের বানজ়ারা হিলসে। সেখানে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন। কিন্তু, পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল ছেলে জিশান। অভিযোগ, প্রেমিকের সঙ্গে মিলে জিশানকে খুন করে ফলকনামা এক্সপ্রেসে সিটের নিচে রেখে চলে আসে। এদিকে মেয়ের খোঁজ পেয়ে ততক্ষণে চিন্তায় ঘুম উড়েছে সুলতানার বাড়ির লোকজনের। ছবি দিয়ে থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও হয়। সেই ছবির সূত্র ধরেই শুরু হয় তদন্ত। ফলকনামা এক্সপ্রেস থেকে উদ্ধার হওয়া শিশুর সঙ্গে মিলেছে যায় দেড় বছরের ওই নিখোঁজ শিশুর ছবি।
অন্ধপ্রদেশ থেকে সুলতানা ও তাঁর প্রেমিককে গ্রেফতার করে হাওড়া জিআরপি। তারপর থেকেই চলছিল মামলা। অবশেষে সামনে এল রায়। সরকারি আইনজীবী অরিন্দম মুখোপাধ্যায় বলছেন, সমস্ত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করেছেন ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক সন্দীপ চক্রবর্তী। ফাঁসির সাজা ঘোষণা হয়েছে। অন্যদিকে সুলতানাদের আইনজীবী ফিরোজ সরকার আবার জানাচ্ছেন, তাঁরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।