দক্ষিণ ২৪ পরগনা: অনুব্রত মণ্ডলের সেই অমোঘ ডায়ালগ, রাস্তায় উন্নয়ন দাঁড়িয়ে আছে। কোথায় রাস্তার খানাখন্দ দেখলে অনুব্রত মণ্ডলের সেই ডায়ালগ ধার করে শাসক শিবিরকে কটাক্ষ করতে ছাড়েন না বিরোধীরা। কিন্তু এমন যদি হয়, খাতায় কলমে রাস্তা, অথচ বাস্তবে নেই! এই যেমন, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর-২ নম্বর ব্লকের কৌতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের গরানকাটি গ্রামের রাস্তা। নামেই সেই রাস্তা। গ্রামের ধানজমির ভেতর দিয়ে আলপথ। মেঠো আলপথ। চারিদিকে ঝোপঝাড়ে ভরা। কিছু অংশ আবার জলে ডুবে রয়েছে। হাঁটু সমান জল পেরিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে গ্রামের বাসিন্দাদের। সরকারি নথিতে এই আলপথটিকে দেখানো হয়েছে কংক্রিটের রাস্তা। খরচ দেখানো হয়েছে ৪০ লক্ষ টাকারও বেশি। আর তা নিয়েই রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে।
২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে বেশ কয়েক ধাপে এই কাজ শেষ করা হয়েছে বলে সরকারি নথিতে উল্লেথ রয়েছে। অথচ বাস্তবে সেই রাস্তার কোনও অস্তিত্ব নেই বলে দাবি গ্রামবাসীদের। এই এক কিলো মিটারের বেশি কংক্রিটের রাস্তা তৈরিতে দুর্নীতির অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টের দারস্থ হয় গ্রামবাসীরা।
গত জুন মাসে কলকাতা হাইকোর্ট মথুরাপুর-২ নম্বর ব্লকের বিডিওকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। আদালতের পাশাপাশি দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক, ডায়মন্ড হারবারের মহকুমাশাসক ও বিডিওকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন গ্রামবাসীরা। এই রাস্তা তৈরি হলে ব্লক অফিস, হাসপাতাল ও কলেজে যাওয়ার দূরত্ব অনেকেটাই কমে যাবে।
কিন্তু বর্তমানে সেই রাস্তা তৈরি না হওয়ায় সমস্যায় গ্রামের বাসিন্দারা। বিদায়ী পঞ্চায়েত প্রধান বাসন্তী সরকার অবশ্য ঠিকাদারের ওপর দোষ চাপিয়েছেন। স্থানীয় বিজেপি ও সিপিএম নেতৃত্ব তৃণমূলের পঞ্চায়েত ও শাসক দলের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তৃণমূলের কৌতলা অঞ্চল সভাপতি জয়দেব হালদার দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে উল্টে রাস্তা তৈরিতে গ্রামবাসীদের বাধার অভিযোগ তুলেছেন। মথুরাপুর-২ ব্লকের বিডিও নাজির হোসেন জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশে তদন্তে সব অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।