দক্ষিণ ২৪ পরগণা: আবারও ধাক্কা খেল ভাইজানের দল। কয়েকদিন আগে ভাঙড়ের একটি সভাস্থলে যাওয়ার কথা ছিল আব্বাস সিদ্দিকির। কিন্তু সেই সভা পর্যন্ত যেতেই পারেননি ভাইজান আব্বাস সিদ্দিকি। আর এবার ছোট ভাই নওসাদ সিদ্দিকির বাড়ির কাছেই তাঁর অনুগামীদের তৃণমূলে যোগদান করিয়ে জোড়া ধাক্কা দিলেন ভাঙড়ের দাপুটে নেতা আরাবুল ইসলাম।
মাঝেরহাটে গ্রামের একটি বাড়িতে ভাড়া নিয়েছেন নওসাদ। শুক্রবার সেই পাড়াতেই আরাবুলের হাত ধরে শতাধিক আইএসএফ কর্মী তৃণমূলে যোগদান করেন। ফলে বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে ভাঙড়ের যে রাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টাতে শুরু করেছিল এবার তার উলটপূরাণ শুরু হয়ে গেছে বলে মনে করছেন রাজনীতিবীদরা।
এদিনের, এই সভা থেকে থেকে আইএসএফকে দুর্বল করার অভিপ্রায় দেখা গিয়েছে বক্তাদের বক্তব্যে। ভোগালি ২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মোদাসসের হোসেন বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন,”যারা আইএসএফ করছে তাঁরা চলে এসো। আর যারা ভাবছে ২০২৩ এর পঞ্চায়েত ভোটে নমিনেশন দেবে আরাবুল ইসলাম বললে তাঁরা ফুলতলা পর্যন্ত পৌঁছাতে পারবে না।”
পাশাপাশি আরাবুল পুত্র হাকিমূল ইসলাম বক্তব্য রাখতে গিয়ে জানান,নওসাদের বাড়ি ভাড়া দিয়েছে যে ভদ্রলোক তিনি সহ অনান্যরাও তৃণমূলে যোগদান করবে। নওসাদ সিদ্দিকী যেখানে যেখানে যাবেন, সেখানে-সেখানে যোগদান কর্মসূচি।
এবারের বিধানসভা নির্বাচনে গোটা রাজ্য জুড়েই শাসক দলের নেতা কর্মীরা দলে দলে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। যদিও ভাঙড়ের ক্ষেত্রে শাসকদল ছেড়ে আই এস এফ বা সংযুক্তা মোর্চাতে নাম লিখিয়েছিলেন অসংখ্য নেতা কর্মী।তৃতীয়বারের জন্য তৃণমূল সরকার গঠন হওয়ার পর আবার বিরোধী দলে যাওয়া নেতা কর্মীরাই শাসকদলে ফিরছেন।
ভাঙড়ের শানপুকুর অঞ্চল থেকেই নওসাদ সাড়ে আট হাজার ভোটের লিড নিয়েছিলেন। যার অনেকটাই এসেছিল মাঝেরহাট গ্রাম থেকে। আইএসএফের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত মাঝেরহাট গ্রামেই বাড়ি ভাড়া নিয়ে নিজের বিধায়ক কার্যালয় চালাচ্ছেন নওসাদ। যেখানে তৃণমূল বা প্রশাসনের প্রবেশ ছিল এক প্রকার নিষিদ্ধ। শুক্রবার নওসাদের সেইবাড়ির পাশেই সভামঞ্চ করে আইএসএফ নেতৃত্বকে নিজের দলে ভিড়িছেন আরাবুল। দলবদলুরা এলাকার উন্নয়ন দাবি করেই দলবদল করেছেন বলে জানিয়েছেন। আরাবুল ছাড়াও এদিন হাকিমুল ইসলাম, মোদাসের হোসেন, ইব্রাহিম মোল্লা উপস্থিত ছিলেন। আরাবুল বলেন,”কিছু মানুষ ভুল বুঝে দূরে সরে গিয়েছিলেন।মাঝেরহাট গ্রামের মূল রাস্তা ও কয়েকটি ঢালাই রাস্তা দাবি করে ওরা তৃণমূলে যোগ দিয়েছে। ওরা বুঝতে পেরেছে ২০২৩ এর নির্বাচনে শুধু তৃণমূলই থাকবে। আর কেউ প্রার্থী দিতে পারবে না। ওঁদের দাবি আমরা পূরণ করে দেব।”
পাল্টা বিবৃতি দিয়ে নওসাদ বলেন,”তৃণমূল কিছু বহিরাগত লোকজন দল-বদলের নাটক করে ওই গ্রামে অশান্তি করতে চাইছে। আমরা কর্মীদের বলেছি মাথা ঠাণ্ডা রাখতে, কারও প্ররোচনায় পা না দিতে।”
আরও পড়ুন: Corona Outbreak: দেশে একদিনে করোনার বলি ৫৫৫, কেরলেই সংখ্যাটা ৪৭১