সুন্দরবন: সুন্দরবন (Sundarban) এলাকার রেশন সামগ্রী পাচার চক্রের পর্দা ফাঁস করল কাকদ্বীপ থানার পুলিশ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে অভিযান চালিয়ে শনিবার দুপুরে পাচারের সময় প্রচুর রেশন সামগ্রী ভর্তি একটি ট্রাককে বাজেয়াপ্ত করল পুলিশ। পরে ট্রাক চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে কাকদ্বীপ বাজারে একটি গোডাউনের ম্যানেজার ও দুই কর্মচারীকে গ্রেফতার করল পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, এদিন সকালে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে রেশনের পণ্য ভর্তি একটি ট্রাক আটক করে তারা। কিন্তু ট্রাকের চালককে জিজ্ঞাসাবাদ করে বেশ তাঁর মন্তব্যে একাধিক অসঙ্গতি পাওয়া যায়। এর পর কাকদ্বীপ বাজারে একটি গোডাউনে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে সেখানেও রেশন সামগ্রী পায় পুলিশ। পরে গোডাউনের ম্যানেজার রবিন পান্ডে ও কর্মচারী অনুপ গিরি, তপন মাঝিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পরে পুলিশ গোডাউনটিকে সিল করে দেয়। ট্রাক ও গোডাউন থেকে ৯১৯ বস্তা চাল, ৫৩৩ বস্তা গম ও ১৭৫ বস্তা আটা বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। ওই গোডাউন থেকে এই রেশন সামগ্রীগুলো ট্রাকে করে অন্যত্র পাচার করা হচ্ছিল বলে ধৃতদের জেরা করে জানতে পেরেছে পুলিশ। তবে এই গোডাউনে রেশন সামগ্রী কোথা থেকে এল এবং কারা বিক্রি করেছিল, তা জানতে ধৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে পুলিশ। যদিও ঘটনার পর থেকে গোডাউনের মালিক পলাতক ছিল। তবে এই রেশন সামগ্রী পাচারের পেছনে বড়সড় চক্র কাজ করছে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে।
পরে পুলিশ সূত্রে খবর পাওয়া যায়, এদিন জেলার পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখার্জির নেতৃত্বে গোপন সূত্রে খবরের ভিত্তিতে কাকদ্বীপ থানার আইসি শিবু ঘোষ ও অফিসার ফোর্স কাকদ্বীপ এর একটি গুদামঘরে তল্লাশি চালায়। সেখানে রেশনের চাল সহ রাজ্য সরকারের দেওয়া পিডিএস-এর মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের জন্য নির্ধারিত মোট ৯১৬ বস্তা চাল, ৫৩৩ বস্তা রেশনের গম, ১৭৫ বস্তা রেশনের আটা, ব্যাগ, ক্লোজার পাঞ্চিং মেশিন এবং যে ট্রাকে করে গম পাচার করা হচ্ছিল তা আটক করা হয়। গুদামের ম্যানেজার রবীন পাণ্ডে, কর্মচারী অনুপ কুমার গিরি ও তপন মাঝিকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, দিন দুয়েক আগে একই ধরনের ঘটনা ঘটে মালদহে। ভিন জেলার গাড়ি ব্যবহার করে পাচারের পথে এক লরি রেশনের চাল, আটা উদ্ধার করে পুূলিশ। গ্রেফতার হয় চালক ও সহকারী সহ দুই ব্যক্তি। ঘটনাটি ঘটে বৈষ্ণবনগর থানার বাজাপ্তি পাড়া এলাকায়। এদিকে এই রেশনের জিনিস পাচার নিয়ে শুরু হয় রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবি করে কেন্দ্রীয় সরকার রেশনের জিনিস সাধারণ মানুষের জন্য পাঠায়। আর সেই জিনিসপত্র রাতের অন্ধকারে পাচার করা হচ্ছে। পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি করে বিরোধীরা প্রকৃত তথ্য না নিয়ে মানুষকে ভুল বোঝানোর কাজে ময়দানে নেমে পড়ে। আরও পড়ুন: ৫০-এর বেশি নাবালিকার বিয়ে রুখে নিজে মালা পরালেন ষোড়শীকে! গ্রেফতার আধিকারিক