দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ‘জোয়ার এলে তবেই মেলে মুক্তি!’ এটি এখন রীতিমতো প্রবাদবাক্য হয়ে উঠেছে কাকদ্বীপের বাসিন্দাদের কাছে। জেটিতে পৌঁছনোর আগে মাঝপথে আটকে থাকে যাত্রিবাহী লঞ্চ। কখনও জেটি ছেড়ে বেরিয়েও থমকে যায় লঞ্চের ইঞ্জিন। সৌজন্যে গঙ্গার চর! কাজের সূত্রে তাঁদের মুড়িগঙ্গা পেরোতেই হয়। কিন্তু মাঝেমধ্যেই লঞ্চ আটকে যায় নদীর চরায়।
নদীর চরাকে পাশ কাটাতে গিয়ে মুখোমুখি ধাক্কা দুটি লঞ্চের। মঙ্গলবার বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে কাকদ্বীপের হারুউড পয়েন্টের কাছে মুড়িগঙ্গা নদীতে। দীর্ঘক্ষণ নদীতেই আটকে থাকল দুটি লঞ্চ। ভোগান্তিতে যাত্রীরা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এদিন বিকেলে সাগরে কচুবেড়িয়া থেকে কাকদ্বীপের লট নম্বর আটে আসছিল সুচিত্রা নামে একটি সেচ দফতরের লঞ্চ। ওই লঞ্চে জেলা প্রশাসনের বেশ কয়েকজন আধিকারিক ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
জানা যাচ্ছে, ওই একই সময়ে ঘোড়ামারা দ্বীপ থেকে যাত্রী নিয়ে লট নম্বর আটে আসছিল আরেকটি লঞ্চ। নদীতে ভাটা চলায় জেগে ওঠে চরা। সেই চরাকে পাশ কাটাতে গিয়ে মুখোমুখি ধাক্কা লাগে দুটি লঞ্চের। আর তার জেরেই বিশাল বিপত্তি।
মুহূর্তের মধ্যে লঞ্চ দুটি চরায় আটকে যায়। প্রায় এক ঘণ্টার কাছাকাছি আটকে থাকে নদীর মধ্যে ওই দুটি লঞ্চ। সন্ধ্যা নাগাদ নদীতে জোয়ার শুরু হতে লঞ্চ দুটি কাকদ্বীপের লট নম্বর আট জেটিঘাটে আসতে সক্ষম হয়।
তবে স্থানীয় মানুষ ও যাত্রীদের দাবি, মুড়িগঙ্গা নদীতে নাব্যতা কমে যাওয়ার ফলে প্রায়ই এরকম দুর্ঘটনা ঘটছে। চরায় হেঁটে বেড়ানো বা নিজস্বী তোলা এখন পর্যটকদের বাড়তি পাওনা। এর জেরে চরম সমস্যায় পড়েছেন লঞ্চচালকেরা।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, নদীর প্রবাহ কখনই একমুখী নয়। পলি সঞ্চয় তো হয়ই। পাশাপাশি জোয়ারের মিষ্টি জল ও ভাটার নোনা জল মিশে রাসায়নিক বিক্রিয়া শুরু হয়। তাতে ভাসমান পলি পরস্পরের সঙ্গে মিশে জমাট বাঁধতে থাকে। তাতে চর আরও পুরু হয়। আর তারই জেরে ভোগান্তিতে লঞ্চচালকরা।