ভাঙড়: মনোনয়ন ঘিরে রণক্ষেত্র হয়েছে ভাঙড়। মুড়িমুড়কির মতো পড়েছে বোমা। চলেছে গুলি। গিয়েছে প্রাণ। এই নিয়ে জোর তরজা চলছে শাসক-বিরোধীদের। এরই মাঝে ভাইরাল হয়েছে দুটি ভিডিয়ো। বক্তা একজনই। কিন্তু, ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে বদলে গিয়েছে বক্তব্য। বৃহস্পতিবার আইএসএফের (ISF) উপর হামলা চালাতে শওকত মোল্লার বিরুদ্ধে ৫ হাজার টাকা ও গুলি দিয়ে পাঠানোর অভিযোগ তুলেছিলেন গোবিন্দ নস্কর নামে এক ব্যক্তি। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই বদলালেন বয়ান। তিনি এলাকায় তৃণমূল কর্মী বলেই পরিচিত বলে জানতে পারা যাচ্ছে। প্রথমদিনের ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে ওই ব্যক্তি বলছেন, “আমি শওকত মোল্লার লোক। আমাকে ৫ হাজার টাকা দেবে বলে ভাড়া করে এনেছে। আমাকে মেশিনও দিয়েছে, দানাও দিয়েছে। আমি ওপেন গুলিও চালিয়েছি। আমরা দলে ৩০ জন মতো ছিলাম।” ১৫ জুন সামনে এসেছিল এই ভিডিয়ো। এরইমধ্যে ১৬ জুন শুক্রবার সামনে এল আরও একটি ভিডিয়ো। যদিও এই ভিডিয়োগুলির সত্যতা যাচাই করেনি টিভি-৯ বাংলা।
শুক্রবারের ভিডিয়োতে ওই ব্যক্তিকে বলতে শোনা যাচ্ছে, “আমরা মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়েছিলাম। জমা দেওয়ার পর আইএসএফের কর্মীরা আমাদের ঘেরাও করে। আমি তখন মাঠের দিকে পালাতে যাই। তখন ওরা আমকে খুব মারতে থাকে। মারতে মারতে গ্রামের ভিতরে নিয়ে গিয়ে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। তারপর বলল আমরা যা যা শিখিয়ে দেব তুই তাই তাই বলবি। জীবনের দায়ে আমাকে ওই কথা বলতে হয়েছিল। আমার বাড়িতে ছোট ছোট বাচ্চারা রয়েছে। আমি যদি সত্যি ভাড়াটে মস্তান হতাম তাহলে কী আমার বাড়ির অবস্থা এত খারাপ হত!” এই দুই ভিডিয়ো সামনে আসতেই তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে জেলার রাজনৈতিক মহলে।
অন্যদিকে মনোননয়ন পর্বের শুরু থেকেই দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে ভাঙড়ে। প্রাণ গিয়েছে ২ জনের। হামলা হয়েছে সংবাদমাধ্যমের উপরেও। এদিকে সিংহভাগ ক্ষেত্রেই তৃণমূলের বিরুদ্ধে আইএসএফ কর্মীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। পাল্টা আইএসএফের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছে শাসকদল। এরইমধ্যে ১৫ জুন মনোনয়নের শেষ দিন কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজার। ক্যামেরার সামনেই চলতে থাকে বোমাবাজি। এদিকে এরইমধ্যে আবার রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছেন বিজেপির রাজ্য-সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই পঞ্চায়েত ভোটের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।