দক্ষিণ ২৪ পরগনা: শনিবারের তৃণমূল (TMC) -আইএসএফ (ISF) সংঘর্ষের পর রবিবার সকাল থেকে উত্তপ্ত ভাঙড় (Bhangar)। এলাকায় রয়েছে চাপা উত্তেজনা। গোটা গ্রাম মুড়ে ফেলা হয়েছে পুলিশে। গ্রামের বেশিরভাগ পুরুষ সদস্যই কার্যত ঘরছাড়া। ভরে ঘর থেকে বেরোচ্ছেন না অনেকেই। রবিবারে গ্রামে আসার কথা রয়েছে আব্বাস সিদ্দিকির। এদিন বেলা ২টো নাগাদ তাঁর গ্রামে আসার কথা। এলাকায় ব্যপক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। উপস্থিত রয়েছেন আইপিএস অজয় গণপতি, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাকসুদ হাসান-সহ উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকরা। সভা হওয়ার মাঠে চলছে তৃণমূল কংগ্রেসের ফুটবল খেলা। গ্রামে যাতে নতুন করে কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সেদিকে খেয়াল রেখেছেন পুলিশ কর্তারা।
বোমাবাজি, ভাঙচুরে গত রাতে ফের উত্তপ্ত ভাঙড়। পদ্মপুকুরে বেছে বেছে দলীয় কর্মীদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে তৃণমূল। এমনই অভিযোগ এনেছে আইএসএফ। অভিযোগ অস্বীকার শাসক দলের। পরিস্থিতি সামলাতে ঘটনাস্থলে পুলিশ। আক্রান্ত দলীয় কর্মীদের দেখতে চিত্তরঞ্জন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যান আইএসএফ চেয়ারম্যান তথা ভাঙড়ের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। আইএসএফ নেতা আব্বাস সিদ্দিকির একটি ধর্মীয় সভা করার কথা ছিল। সেই সভার আগেই এলাকায় ছড়াল উত্তেজনা ছড়ায়। শনিবার সন্ধ্যায় ভাঙড় থানার বড়ালী মালঞ্চ এলাকায় ১ নম্বর ব্লকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল-আইএসএফ। ঘটনায় বেশ কয়েকজন আইএসএফ কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হচ্ছে। খবর পেয়েই এ দিন হাসপাতালে ছুটে যান বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। আহতদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
রবিবার দুপুরে ভাঙড়ের বড়ালী পদ্মপুকুর এলাকায় সুন্নাতুল জামাতের কর্ণধার তথা পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির একটি ধর্মীয় সভা করার কথা রয়েছে। অভিযোগ, সেই ধর্মীয় সভা ভেস্তে দিতেই তৃণমূল আব্বাস অনুগামীদের হুমকি দিতে থাকে। আহলে সুন্নাতুল জামাতের কর্মীরা এই ঘটনার প্রতিবাদ করলে উভয়পক্ষের মধ্যে গন্ডগোল বেধে যায় বলে স্থানীয় সূত্রে জামা গিয়েছে।
আইএসএফ কর্মীদের অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরা ওই এলাকায় আব্বাস অনুগামীদের বাড়িঘরে ভাঙচুর চালিয়েছে। আসাদুল মোল্লা নামে এক আহলে সুন্নাতুল জামাতের কর্মীর বাড়িঘর ভাঙচুর করে এবং তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এদিকে শাসক দলের গলায় অন্য সুর। ভাঙড়ে আয়োজিত ফুটবল টুর্নামেন্ট বানচালের চক্রান্ত করছে আইএসএফ। তার জেরেই উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। দাবি এলাকার স্থানীয় তৃণমূল নেতা কাইজারের।
ভাঙড়ে তৃণমূল-আইএসএফ সংঘর্ষ অবশ্য নতুন নয়। গত ২ রা মে একুশের বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশ হয়েছিল। এর পরদিন অর্থাৎ ৩ মে দেগঙ্গা বিধানসভার দত্তপুকুরে আইএসএফ কর্মী হাসানুর জামানকে মাঠের মধ্যে বোমা মেরে খুন করা হয় বলে অভিযোগ ওঠে। এই ঘটনায় আইএসএফের পক্ষ থেকে সিবিআই তদন্তের দাবি তোলা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: কেন রাজ্য কমাচ্ছে না ভ্যাট? জ্বালানি ইস্যুতে এবার পথে নামছে বিজেপি, শহর জুড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি