Canning: সিঁদুর, কপালে টিপ, ফুল দিয়ে স্ত্রীকে সাজিয়েছিলেন! স্বামীর সামনে থেকে স্ত্রীকেই তুলে নিয়ে গেল পুলিশ

TV9 Bangla Digital | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Oct 04, 2021 | 8:05 AM

Canning: বাঁকুড়া ও বীরভূম জেলার বিভিন্ন মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয় ওই গৃহবধুকে। এক বছর ধরে আরও অবস্থার অবনতি হয় ওই গৃহবধূর।

Canning: সিঁদুর, কপালে টিপ, ফুল দিয়ে স্ত্রীকে সাজিয়েছিলেন! স্বামীর সামনে থেকে স্ত্রীকেই তুলে নিয়ে গেল পুলিশ
ক্যানিংয়ে ক্যান্সার আক্রান্ত গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু (নিজস্ব চিত্র)

Follow Us

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সিঁথিতে সিঁদুর, কপালে চন্দন, পায়ে আলতা, ফুলের মালা দিয়ে স্ত্রীকে সাজিয়ে দিয়েছিলেন স্বামী। বাঁশের তৈরি খাটিয়াও তৈরি হয়ে গিয়েছিল। নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল অন্তিম যাত্রায়। কিন্তু তার আগেই এসে উপস্থিত পুলিশ। তুলে নিয়ে যাওয়া হল দেহ। ক্যান্সার আক্রান্ত এক মহিলার মৃত্যু ঘিরে শোরগোল পড়ল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের (Canning) উত্তরদোখালি গ্রামে। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, আগুনে পুড়েই মৃত্যু হয়েছে ওই গৃহবধূর। মৃতের নাম তরী সরদার(৩৮)।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ২৩ বছর আগে ক্যানিংয়ের বাইশসোনা গ্রামের তরী সরদারের সঙ্গে বিয়ে হয় পঞ্চম সরদারের। দম্পতির এক পুত্র ও দুই কন্যা রয়েছে। বছর দুই আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন ওই গৃহবধূl চিকিৎসায় ধরা পড়ে তাঁর গলায় এবং জিভে ক্যানসার হয়েছে।

এমন ঘটনায় পরিবারে অন্যান্য সদস্যরা মর্মাহত হয়ে পড়েন। শুরু হয় ওই গৃহবধুর চিকিৎসা। ক্যানসার হাসপাতাল, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, নীলরতন সরকার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। শরীরে বাসা বাঁধা ক্যানসার ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

এক সময় চিকিৎসায় কোন প্রকার সাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন তরী। বাঁকুড়া ও বীরভূম জেলার বিভিন্ন মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয় ওই গৃহবধুকে। এক বছর ধরে আরও অবস্থার অবনতি হয় ওই গৃহবধূর। চলাফেরা করা কার্যত বন্ধ করে দেন তিনি। এমনকি খেতেও পারতেন না।প্রতিনিয়ত মুখ দিয়ে রক্ত বের হত বলে পরিবারের সদস্যদের দাবি।

যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে ক্ষতস্থানে আগুনের স্যাঁক দিতে শুরু করেন। পরিবারের দাবি, স্যাঁক দেওয়ার জন্য ওই গৃহবধুর বিছানার পাশে প্রায় ২৪ ঘন্টাই স্টোভ জ্বালা থাকতে। রবিবার তরী তাঁর শরীরে যন্ত্রণা অনুভব করেন। আগুনের স্যাঁক দিচ্ছিলেন। তখনই কোনওভাবে তাঁর পোশাকে আগুন লেগে যায়। কাউকে কিছু বলতে পারেননি। নজরে পড়ে গৃহবধুর স্বামী পঞ্চুর। তিনি তড়িঘড়ি কাঁথা ভিজিয়ে আগুন আয়ত্ত্বে আনার চেষ্টা করেন। গৃহবধুর দেহের কিছুটা অংশ পুড়ে যায়।

পাশাপাশি তাঁর স্বামীরও বাম হাতের আঙুল পুড়ে যায়।প্রতিবেশী ও পরিবার পরিজনেরা তড়িঘড়ি ওই গৃহবধুকে উদ্ধার করে স্থানীয় তালতলা মোড়ে এক গ্রামীণ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। প্রাথমিক চিকিৎসার পর সামান্য সুস্থ হতেই ওই গৃহবধুকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ওই গৃহবধূর মৃত্যু হয়।

এরপর মৃতদেহ দাহ করার জন্য তোড়জোড় শুরু হয়। বাঁশের খাটিয়া তৈরী করা হয়। খাটিয়াকে ফুলের মালা দিয়ে সাজানো হয়। শেষযাত্রার জন্য মৃতদেহ নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে শশ্মানের উদ্দেশ্যে রওনা দেন পরিবারের সদস্যরা। ইতিমধ্যে কোনও এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে গোপন সূত্রে খবর পায় ক্যানিং থানার পুলিশ। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থালে হাজির হয় পুলিশ। শশ্মানে যাওয়ার পথে আটকে দেয় মৃতদেহ। সেখান থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ঠিক কী কারণে মৃত্যু, তা খতিয়ে দেখতে দেহের ময়নাতদন্ত করা হবে। তদন্ত শুরু করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ।

আরও পড়ুন: Durgapur Barrage: আরও কমানো হল দুর্গাপুর ব্যারাজ থেকে জল ছাড়ার পরিমাণ, পরিস্থিতি ফেরার আশা

Next Article