দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে সোনারপুর প্রতাপ নগরে নিহত বিজেপি কর্মী হারান অধিকারীর বাড়িতে দ্বিতীয়বার এলেন সিবিআইয়ের প্রতিনিধিরা (CBI)। গত বৃহস্পতিবার মৃত বিজেপি (BJP) কর্মীর বাড়িতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দার প্রতিনিধিরা। ফের রবিবার নিহত হারানের বাড়িতে আসেন তাঁরা। তবে, দুদিনের মধ্যে ফের কেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা ওই নিহত বিজেপি কর্মীর বাড়িতে আসেন তা স্পষ্ট নয়।
গত ২মে বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের দিনেই প্রতাপনগর অঞ্চলের মেটিয়ারিতে নিহত হন ওই বিজেপি কর্মী। ঘটনায় অভিযোগের তির তৃণমূলের দিকে। যদিও খুনের অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল। ওইদিন ফল প্রকাশের পর সন্ধ্যা নাগাদ একদল তৃণমূল কর্মী বিজেপির পতাকা ছিঁড়ে দেয় বলে অভিযোগ। ঘটনার প্রতিবাদ করলে বিজেপির এক মহিলা সমর্থককে মারধর করার অভিযোগ ওঠে। সে সময়ই পাড়ার অন্য ছেলেরা এগিয়ে এসেছিলেন। তখন তাঁদের উপর লাঠি, রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা হামলা চালায় বলে অভিযোগ। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, ওই হামলার জেরেই গুরুতর আহত হন হারান। বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
রাজ্য়ে ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence) মামলায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (NHRC) সুপারিশকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছিল রাজনৈতিক তরজা। পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল। কিন্তু, সেই মামলায় জোর ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য সরকার। তারপর থেকেই বারবার নিরপেক্ষতার প্রশ্ন তুলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে বিঁধেছে রাজ্য সরকার। সম্প্রতি, জগদ্দলের তৃণমূল বিধায়ক নিহত বিজেপি সমর্থক শোভারানি মণ্ডলের মৃত্যু-মামলায় সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে মিথ্যা মামলায় তৃণমূল কর্মীদের ফাঁসানো হচ্ছে। পাশাপাশি, তিনি এও বলেন, “সিবিআই আর তদন্তকারী সংস্থা নেই। পোষা নেতা হয়ে গিয়েছে।” কিছুদিন আগেই সিবিআইকে ‘খাঁচাবন্দি তোতা পাখি’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
ভোট পরবর্তী হিংসা তদন্তে ইতিমধ্য়েই দুদিনে দুটি চার্জশিট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বিজেপি কর্মী জয়প্রকাশ যাদব খুনে ব্যারাকপুর আদালতে চারজনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে তারা। চার্জশিটে নাম রয়েছে টুনটুন চৌধুরী নামে একজনের। এ ছাড়াও আরও তিনজনের নাম রয়েছে সেখানে। তদন্ত ভার গ্রহণের দু’ সপ্তাহের মধ্যেই দু’টি চার্জশিট জমা দিল গোয়েন্দারা। বৃহস্পতিবার নদিয়ার একটি খুনের ঘটনায় চার্জশিট জমা পড়ে। শুক্রবার ভাটপাড়া থানা এলাকার একটি খুনের ঘটনায় জমা পড়ল চার্জশিট।
শুক্রবার যেদিন ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার দ্বিতীয় চার্জশিট পেশ করা হল, সেদিনই সিটের চেয়ারম্যান হিসাবে নিযুক্ত করা হল কলকাতা হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরকে। বিশেষ তদন্তকারী দল বা এই সিটে ১০ জন দক্ষ আইপিএস আধিকারিক রয়েছেন। যারা রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তাঁরা মূলত সিটের সদস্য। সেই দলের চেয়ারম্যান কলকাতা হাইকোর্টের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর। আরও পড়ুন: সামশেরগঞ্জে লড়বে না কংগ্রেস, নির্বাচন থেকে ‘ওয়াকওভার’ প্রার্থী জৈদুর রহমানের