সামশেরগঞ্জে লড়বে না কংগ্রেস, নির্বাচন থেকে ‘ওয়াকওভার’ প্রার্থী জৈদুর রহমানের

Samserganj: রবিবার, সামশেরগঞ্জে কংগ্রেস প্রার্থী জৈদুর রহমান নির্বাচনে লড়বেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

সামশেরগঞ্জে লড়বে না কংগ্রেস, নির্বাচন থেকে 'ওয়াকওভার' প্রার্থী জৈদুর রহমানের
প্রার্থী জৈদুর রহমান
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 05, 2021 | 2:44 PM

মুর্শিদাবাদ: বঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনে (West Bengal Assembly Election 2021) যে কেন্দ্রগুলিতে নির্বাচন বাকি রয়েছে, তারমধ্যে অন্যতম হল সামশেরগঞ্জ। ইতিমধ্যেই বঙ্গে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। সেই মোতাবেক সামশেরগঞ্জে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের দিন ঘোষিত হয়েছে। রবিবার, সামশেরগঞ্জে কংগ্রেস প্রার্থী জৈদুর রহমান নির্বাচনে লড়বেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। ব্যক্তিগত কারণেই তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না বলে জানিয়েছেন।

যদিও, দলের অন্দরে গুঞ্জন, প্রার্থী জৈদুর রহমানের দাদা জঙ্গিপুরে তৃণমূল জেলা সভাপতি। জৈদুর কংগ্রেস প্রার্থী হওয়ায় পারিবারিক ব্যবসাতেও ক্ষতি হচ্ছে। তাছাড়া দলবদলের মরসুমে জৈদুরের নজর ঘাসফুল শিবিরেই। ফলে, নির্বাচনে ‘না’ কংগ্রেস নেতার।

উল্লেখ্য়, বিধানসভা নির্বাচন আবহে, গত ১৫ এপ্রিল এই কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী রেজাউল হক করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যান। সামশেরগঞ্জে নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল ২৬ এপ্রিল। কিন্তু প্রার্থীর মৃত্যু ঘটায় নির্বাচন স্থগিত হয়। পরে গত ১৩ মে ওই কেন্দ্রে নির্বাচনের দিন ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। কিন্তু, সেদিন ইদ উত্‍সব থাকায় সংখ্য়ালঘুরা ভোট দিতে অস্বীকার করেন। ফলে থমকেই ছিল নির্বাচন।

সামশেরগঞ্জে এ বার কি তবে ত্রিমুখী লড়াই হতে চলেছে? বরাবর কংগ্রেসের ঘাঁটি বলে পরিচিত মুর্শিদাবাদ জেলাতে বিধানসভা নির্বাচনে একটিও আসন লাভ হয়নি বাম-কংগ্রেসের। কার্যত, সবুজ ঝড় ‘অধীর গড়ে’। উপরন্তু, নির্বাচন আবহে সামশেরগঞ্জে জোট নিয়েও সমস্যা দেখা গিয়েছিল। সংযুক্ত মোর্চার ফর্মূলা অনুযায়ী, সামসেরগঞ্জ আসনটি সিপিএমের জন্য বরাদ্দ হলেও সেখানে কংগ্রেসও তাদের প্রার্থী ঘোষণা করল। যা নিয়ে জোর চাপানউতোর শুরু হয় মুর্শিদাবাদের রাজনৈতিক মহলে। যদিও পরে এই কেন্দ্রে কংগ্রেসকে আসন ছাড়তে রাজি হয় সিপিএম।

রাজ্য়ে পুরভোট না উপনির্বাচন আগে হবে তা নিয়ে রীতিমতো শাসক-বিরোধী দড়ি টানাটানির পালা ইতিমধ্যেই শেষ। শনিবার, রাজ্যে উপনির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা করে  নির্বাচন কমিশন। মুখ্য়মন্ত্রীর কেন্দ্র ভবানীপুর-সহ সামশেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুরে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত হয়েছে। তবে বাকি রয়েছে দিনহাটা, গোসাবা, শান্তিপুর ও খড়দহের উপনির্বাচন তিথি।

উপনির্বাচন ঘোষণার থেকেও বেশি দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে কমিশনের বিরুদ্ধে বঙ্গ বিজেপির বিদ্রোহ। বঙ্গ বিজেপির শীর্ষ নেতারা যে ভাষায় কমিশনের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন, তা একপ্রকার নজিরবিহীন। ভুলে গেলে চলবে না, এই বিজেপি নেতারাই ১০০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী এনে আট দফায় বিধানসভা ভোট করার জন্য নির্বাচন কমিশনের আকণ্ঠ প্রশংসা করেছিলেন। সেই নেতারাই কমিশনের আজকের সিদ্ধান্তে ‘শকড’। কারণ বিজেপি আগাগোড়াই উপনির্বাচনের বিরুদ্ধে ছিল। তাদের আপত্তি উড়িয়ে বাকি আসনগুলিতে উপনির্বাচন না করে শুধুমাত্র ভবানীপুরকে কী ভাবে বেছে নিল কমিশন?

দিলীপ ঘোষ একেবারে সরাসরি কমিশন প্রভাবিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন। তাঁর দাবি, উপ নির্বাচন যখন হচ্ছে, তখন সবকটি কেন্দ্রেই হওয়া প্রয়োজন ছিল। তিনি এ দিন জোর দিয়ে বলেন, ‘কমিশন অবশ্যই প্রভাবিত হয়েছে আমরা জানতে চাইব কেন এটা হয়েছে।’  ভেবে কুল-কিনারা পাচ্ছেন না বিজেপি নেতারা। এই অবস্থায় শুধুমাত্র একটি আসনে বিধানসভা ভোট ঘোষণার কারণে কমিশনের বিরুদ্ধে আইনগত ভাবে কোনও পদক্ষেপ করা যায় কি না, সেই ভাবনাও ভাবা শুরু করেছে গেরুয়া শিবির।

বলাই বাহুল্য, বঙ্গ বিজেপি চাইলেই নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি পথে হাঁটতে পারবে না। এর জন্য তাদের সবার আগে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অনুমোদন নিতে হবে। নয়তো কোনও ভাবেই কিছু করা সম্ভব নয়। সূত্রের খবর, এই নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করা হতে পারে। সেই দরজাও বিজেপি খোলা রাখতে চাইছে। তবে আগামী ৬ এবং ৭ সেপ্টেম্বর আগে বৈঠকে বসে প্রার্থীদের সম্পর্কে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। কমিশনের বিরুদ্ধে আইনি রাস্তায় হাঁটা যায় নাকি, সেই কথা পরে ভাবা হবে। আরও পড়ুন: বিশ্লেষণ: টিকা নিয়ে রক্তারক্তি, বঙ্গ জুড়ে অনিয়ম, গাফিলতি কোথায়?