কাকদ্বীপ: সম্পূর্ণ হল নবজোয়ার কর্মসূচি। প্রায় ২ মাস আগে কোচবিহার থেকে শুরু হয় নবজোয়ার কর্মসূচি। শেষ হল কাকদ্বীপে। এ দিনের কর্মসূচিতে একদিকে যেমন বিরোধীদের চাঁছাছোলা আক্রমণ করেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, তেমনই আদ্যোপান্ত তাদের তুলোধনা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, অদূর ভবিষ্যতে দল যে নতুন প্রজন্মের হাত ধরে চালিত হবে এ দিন সেই বার্তাও দেন তৃণমূল সুপ্রিমো। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যুবদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, “নবজোয়ার কর্মসূচি নতুন ইতিহাস তৈরি করেছে। নতুন রক্ত নিয়ে এসেছে।”
দু’মাস আগে যখন ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচি শুরু হয় সেই সময় সেই সময় খানিকটা ধন্দেই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ‘এত গরমের’ মধ্যে একটানা দু’মাস বাইরে থেকে কীভাবে কর্মসূচিটি হবে তা নিয়ে খানিকটা চিন্তিত ছিলেন তিনি। পরে বাঁকুড়ায় কর্মসূচি থাকাকালীন যখন অভিষেককে সিবিআই ডেকে পাঠায় সেই সময় খোদ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অভিষেককে আটকে নবজোয়ার কর্মসূচি বন্ধ করা যাবে না। অভিষেককে যদি ওরা আটকে রাখে তবে জেলায় জেলায় আমি যাব।” তাঁর কথায়, “আমি ওকে বললাম সময় নিয়ে নে। বাঁকুড়া,পুরুলিয়া করে চলে আসবি। একটা ছেলে ২৫ দিন ধরে বাইরে। ঠিক করে খাওয়া,ঘুম হয়নি।”
সেই ঘটনার পর আজ ফের ‘নবজোয়ারের’ মঞ্চে যৌথভাবে দেখা গেল মমতা-অভিষেককে। আজ সভার শুরুতেই অভিষেককে ছোটবেলার একটি ছবি উপহার দেন মমতা। ফিরে যান অতীতে। ভরা জনসভায় জানান, অভিষেক আজ থেকে রাজনীতি করছেন না। দু’বছর বয়স থেকেই তিনি নেমেছেন ময়দানে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “অনেকে বলে দিদি এসে ভাইপোকে এমপি করে দিয়েছে। অভিষেক রাজনীতি করে দু’বছর থেকে। ১৯৯০ সালে সিপিএম আমায় মেরে চৌচির করে দেয়। হাসপাতাল থেকে বাড়ি আসার পর মা জিজ্ঞাসা করে কীভাবে ঘটল? তখন ওর মার কোলে বসে সবটা শুনেছিল। এরপর থেকেই অভিষেক ঝান্ডা নিয়ে বলত দিদিকে মারলে কেন সিপিএম জবাব দাও। ও সেই ছোট থেকে মিছিল করত।”
এখানেই শেষ নয়, তৃণমূল করার জন্য তাঁদের যে কটুকথা শুনতে সেই বিষয়ও উল্লেখ করেন তিনি বলেন, “ভাষা সন্ত্রাস চলেছে। আমার, অভিষেকের নামে কী না বলে…মানবিক থেকে দানবিক হচ্ছে?”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এ দিনের সভায় কার্যত অভিষেককেই প্রোজেক্ট করলেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সঙ্গে আগামীর দায়িত্ব তুলে দিলেন তরুণদের হাতে। একই সঙ্গে অভিষেককে নিয়ে বিরোধীদের বক্রোক্তির জবাবও দিলেন তিনি।