ডায়মন্ডহারবার: একের পর এক দুর্যোগে বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলা। সেই পুজোর আগে থেকে শুরু হয়ে পুজোর পর অবধি বাংলার আকাশে ছিল দুর্যোগের ঘনঘটা। এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক। কিন্তু কয়েকদিনের বৃষ্টিতে নেমেছে ধস।
ঘটনাস্থান দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ডহারবার পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের শান্তিপল্লীর। এলাকার হুগলি নদীর সঙ্গে যুক্ত ক্রিকখালের পাশে বড়সড় ধস নামে।
গতকাল গভীর রাতে স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথম ধস দেখতে পান। এই ধসের জেরে ফাটল দেখা দেয় অনেক বাড়িতে। খবর পেয়েই রাতেই সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রশাসনের তরফে এলাকার মানুষকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যে কিছু মানুষকে স্থানীয় ডায়মন্ডহারবার হাইস্কুলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আজ বেলায় আরও মানুষকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। বাসিন্দাদের অনেকেই বাড়ির জিনিসপত্র সরিয়ে নিতে শুরু করেছেন।একজন বাসিন্দা বলেন,” আমার বাড়ির দেওয়াল ভাঙতে শুরু করেছে। এর মধ্যেই এক কোমর পর্যন্ত ভেঙে গিয়েছে। ভিত থেকে দেওয়াল খুলে গিয়েছে। খালের পাড় একদম বাঁধানো নেই। সরকারের তরফে রোজ বলা হচ্ছে পাড় বাঁধিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু কিছুই করা হল না। ছোটো ছেলেমেয়েদের নিয়ে কি রাস্তায় থাকব? খালের পাড় এতটাই ভেঙেছে যে এখন হাইস্কুলে গিয়ে আশ্রয় নিতে হচ্ছে। ”
রাতেই ঘটনাস্থানে আসেন বিধায়ক পান্নালাল হালদার ও পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্যরা। আজ বেলায় সেচ দফতরের আধিকারিকরা ঘটনাস্থানে আসবেন। ধস এলাকাটি আপাতত ঘিরে রাখা হয়েছে। বাসিন্দারা আতঙ্কে ভুগছে।
ডায়মন্ডহারবার এসডিও সুকান্ত সাহা জানান,” আপাতত ১০ বাসিন্দকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাকিদেরও ব্যবস্থা করা হবে। খাবারের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। জল নামার পর যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে দেখে সেচ দফতর, তাহলেই বাসিন্দাদের নিয়ে আসা হবে।”
উল্লেখ্য, এদিকে উত্তরবঙ্গে আপাতত দুর্যোগের মেঘ কেটেছে। পাহাড়ও ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরতে চেষ্টা করছে। তবে এরই মধ্যে নতুন করে সমস্যা দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। একদিকে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে যেমন সমস্যা হচ্ছে। তেমনই পানীয় জলের অভাবও দেখা দিচ্ছে। বিশেষ সমস্যায় হোম স্টেগুলি। পর্যটক রয়েছে, এদিকে তাঁদের পরিষেবা দিতে গিয়ে নাকাল অবস্থা।
দু’দিন আগে পাহাড়ে যেভাবে বৃষ্টি এবং ধস নেমেছে, তাতে সেখানকার পানীয় জলের যে ব্যবস্থা তা একেবারে ভেঙে পড়েছে। এর জেরেই চরম সমস্যায় পড়েছে পাহাড়ের হোম স্টে, হোটেল মালিকরা। সুনতালে খোলা এলাকার বাসিন্দারা জানান, বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে পাহাড়ি রাস্তার। সুনতালে, ঝান্ডি, সামাবিয়ং এলাকায় পানীয় জলেরও সমস্যা দেখা দিয়েছে। আবার এখানকার ৭০% এলাকায় বসে গিয়েছে বিদ্যুৎ পরিষেবা। জলের সমস্যার মূল কারণ হিসাবে তাঁরা বলছেন, এখানে উঁচু ঝরনা থেকে পানীয় জল পাইপের মাধ্যমে গ্রামে আসে। কিন্তু ধসের কারণে সব পাইপ লাইনই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যার ফলে পানীয় জলের সমস্যা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Landslide in Kalimpong: দুর্যোগ কাটলেও বিদ্যুৎ, পানীয় জলের কষ্ট পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গায়