নরেন্দ্রপুর: সকালবেলায় গাছে বাঁধা এক যুবক ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁদেরকে বেধড়ক মার মারতে দেখা গেল এলাকাবাসীকে। পথ-চলতি মানুষজন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময়ও চমকে উঠছিলেন ঠির কী কারণে এমন কাণ্ড!
দক্ষিণ ২৪ পরগনার নরেন্দ্রপুর থানার জগদীশপুরের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। মৃতের নাম পূজা শর্মা। পূজার বাপের বাড়ি শিলিগুড়িতে। জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে নরেন্দ্রপুর থানার জগদীশপুরের বাসিন্দার পেশায় গাড়ি চালকের সঙ্গে সুনীল শর্মার বিয়ে হয়।
অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা পূজার উপর লাগাতার অত্যাচার করত। মারধর করা হত তাঁকে। প্রতিবেশীদের বয়ান অনুযায়ী, নিত্যদিন রাত্রিবেলা পূজার গায়ে হাত তুলতেন তাঁর স্বামী। একাধিকবার প্রতিবেশীরা গিয়ে তাঁকে বাঁচাতেন। তবুও রেহাই মেলেনি। পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর হলে স্থানীয় বাসিন্দারাই পঞ্চায়েতকে অভিযোগ জানায়। তখন কিছুদিন নির্যাতন বন্ধ হলেও ফের সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়। এমনকী, অভিযুক্তরা প্রতিবেশীদের নামে আগে থানায় অভিযোগও জানিয়ে এসেছিল তাদের পারিবারিক সমস্যায় দখলদারি করার জন্য।
এরপর গতকাল মধ্য রাত্রে পূজার চিৎকার শুনতে পান প্রতিবেশীরা। তারপর আজ সকালে গৃহবধূকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেন তাঁরা। এলাকাবাসীর দাবি স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা মেরে ফেলেকে গৃহবধূকে। এরপরই ক্ষিপ্ত জনতা অভিযুক্তদের গাছে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। তারপর তাদের তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে।
স্থানীয় এক মহিলা বলেন, ‘ওদের মধ্যে সাংসারিক অশান্তি নিয়ে মারপিট হত। রাত্রিবেলা যখনই মারত আমি দৌড়ে যেতাম। ওরা এমন একটা পরিবার যে আমাদের পাড়া-প্রতিবেশীদের নামে ভুল কেস দিয়ে দিয়েছে। ওরা ভেবেছিল আমাদের সবাইকে সরিয়ে দিলে বৌটাকে মারতে সুবিধা হবে। এর আগে অনেকবার পঞ্চায়েতকে ডেকেছিলাম। বৌটাকে মারে বলে। আগের বৌটাকে মারত বলে ছেড়ে চলে গিয়েছে। কালকে কখন মেরেছিল বলতে পারব না। তবে মহিলাকে যখন মারছিল তখন ওৎ আর্তনাদ, চিৎকার ঘর থেকে এসেছিল। তারা যে বাঁচাতে যাবে সেই রকম অবস্থাও রাখেনি। আসলে ছেলেটার ম্যানিয়া আছে।’