কলকাতা: দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুভাষগ্রাম থেকে জেএমবি জঙ্গি সন্দেহে এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করলো জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। ধৃতের নাম আব্দুল মান্নান। সম্প্রতি কলকাতার হরিদেবপুর থেকে ধরা পড়ে জেএমবি-র কয়েকজন। তাদের সঙ্গে আব্দুলের যোগাযোগ ছিল বলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের অনুমান। গোয়েন্দারা আব্দুলকে প্রাথমিক জেরা করে জেনেছেন দু বছর আগে সে বাংলাদেশ থেকে এ দেশে ঢুকেছিল। তার কাছ থেকে জাল আধার কার্ড পাওয়া গিয়েছে।
সম্প্রতি হরিদেবপুরে জেএমবি-র কলকাতা মডিউলের বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তদন্তভার এনআইএ হাতে নেয়। সেই তদন্তের সূত্র ধরেই আরও এক সন্দেহভাজন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার সঙ্গে জেএমবি-র সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ধৃত আব্দুল মান্নানকে এনআইএ বিশেষ আদালতে পেশ করা হবে। জেএমবি-র কলকাতা মডিউল সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে চান তদন্তকারীরা।
আব্দুল মান্নান কবে থেকে এই সংগঠনে যুক্ত, তার কাজ কী ছিল, কোথায় কোথায় শাখা বিস্তার করেছিল, তা জানতে চান তদন্তকারীরা। বাংলাদেশ থেকে কীভাবে ভারতে এল, কার সাহায্যে এল, এই সব জানতে আব্দুল মান্নানকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চান গোয়েন্দারা।
গত ১১ জুলাই হরিদেবপুর থেকে পাকড়াও হয় জঙ্গি সন্দেহে ধৃত ৩ জনকে। তাদের বিরুদ্ধে জেএমবি-র সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করেন তদন্তকারীরা। পরে বারাসাত থেকেও এক সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেফতার করে এসটিএফ (STF)। অবশেষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে জামাত-জঙ্গি গ্রেফতারি তদন্তভার যায় এনআইএ-এর হাতে।
উল্লেখ্য, হরিদেবপুর থানা এলাকা থেকে বাংলাদেশের সন্দেহভাজন তিন জেএমবি জঙ্গিকে গ্রেফতারের পর উঠে এসেছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধৃতদের ডেরায় হানা দিয়ে বেশ কিছু তথ্য হাতে পান গোয়েন্দারা। সব থেকে চাঞ্চল্যকর তথ্য হল, একেবারে গোটা গোটা বাংলা অক্ষরে একাধিক লিফলেট সেখান থেকে পাওয়া গিয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল, বাংলায় মায়েদের রান্নাঘরে যেন বোমা তৈরি হয়।
দক্ষিণ কলকাতার হরিদেবপুরে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে ছিল ওই তিন যুবক। প্রায় এক বছর ধরে ওই বাড়িতে বসবাস করছিল তারা। নিজেদের নাম পরিবর্তন করে ভারতীয় নাগরিক হিসাবে পরিচয় দেয়। এরই মধ্যে পুলিশ জানতে পারে তিন জেএমবি জঙ্গি শহরে পরিচয় ভাঁড়িয়ে লুকিয়ে রয়েছে। তড়িঘড়ি তল্লাশি চালায় তারা। এর পরই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জেহাদি ভাবধারা প্রচার করা এবং যুব সমাজকে উদ্বুদ্ধ করে দলে টানাই ছিল ধৃত ৩ জেএমবি জঙ্গির কাজ (Kolkata JMB)। বিভিন্ন নামে ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে প্রচার চালানোর জন্য ব্যবহার করা হত একাধিক মোবাইল ফোন। ভুয়ো নথি দিয়ে সিম কার্ড তুলে সেই সব ফোন ব্যবহার করা হত বলেও জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। ফেসবুকের মাধ্যমে জিহাদি লেখা পোস্ট হত শেখ সাব্বির নামের একটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে। এবারে সুভাষগ্রাম থেকে ধৃত আব্দুল মান্নানের কাজ ঠিক কী ছিল, তা জানতে মরিয়া তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: ‘বাংলার অবস্থা চিনের মতো হয়ে যাবে’, উপনির্বাচনে ৪ গোল খেয়ে হারের ব্যাখ্যা দিলেন দিলীপ