দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সরকারি হাসপাতালে রোগীকে মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন দেওয়ার অভিযোগ উঠল। কাঠগড়ায় কুলতুলি ব্লক গ্রামীণ হাসপাতাল। এই ঘটনায় কুলতুলি থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন রোগীর আত্মীয়রা। ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। গাফিলতির বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে বারুইপুর মহকুমা স্বাস্থ্য প্রশাসন সূত্রে।
কুলতুলির বাসিন্দা মাসুদা সর্দার শুক্রবার সকাল থেকেই অসুস্থ বোধ করছিলেন। সন্ধ্যায় তাঁকে অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি করা হয় কুলতুলি ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে। হাসপাতালে ভর্তির পর তাঁকে যে স্যালাইন দেওয়া হয়, তা মেয়াদ উত্তীর্ণ বলে পরিবারের অভিযোগ।
পরিবারের অভিযোগ, যে অবস্থায় মাসুদাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল, স্যালাইন দেওয়ার পর তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। পরিবারের আরও অভিযোগ, চিকিত্সকরা প্রথমে এ বিষয়ে তাঁদের কিছুই জানাননি। বিষয়টি নজরে আসে রুগীর আত্মীয়দের। তারা পুরো বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আনেন। কিন্তু অভিযোগ, প্রথমে তাঁরাও গ্রাহ্য করেন নি।
এরপর রোগীর আত্মীয়রা দেখতে থাকেন, মাসুদাকে যে স্যালাইন দেওয়া হচ্ছিল, সেটির মেয়াদ চলতি বছরের জানুয়ারিতেই উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। সেই স্যালাইনই দেওয়া হয়েছিল রোগীকে। ফলে তাঁর অবস্থা আরও খারাপ হতে থাকে। তত্ক্ষণাত্ বিষয়টি চিকিত্সকদের জানান রোগীর আত্মীয়রা। কিন্তু অভিযোগ, প্রথমে তাঁরা বিষয়টি মানতেই চাননি।
পরে ছবি-সহ প্রমাণ দিলে বিষয়টি নিয়ে মুখে কুলুপ আঁটেন তাঁরা। একে অপরের বিরুদ্ধে দায় এড়ানোরও চেষ্টা করেছেন। পরে বিষয়টি নিয়ে উত্তেজিত রোগীর আত্মীয়রা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে খবর দেওয়া হয় থানায়। কুলতুলি থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় কুলতুলি থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে রোগীর ছেলে বলেন. “আমার মায়ের প্রস্রাবের সমস্যা হচ্ছিল। তাই পেট ফুলে যাচ্ছিল। আমরা সন্ধ্যায় হাসপাতালে ভর্তি করি। ইঞ্জেকশন দেয়। তারপর মা সুস্থ ছিল। তারপর জ্বর আসে। তখন স্যালাইন দেন চিকিত্সকরা। তারপর দেখি মা আরও অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। তারপর দেখি স্যালাইনের তারিখটাই উত্তীর্ণ হয়ে গিয়েছে। ডাক্তাররা বললে, ওরা প্রথমে হেসেই উড়িয়ে দেন।”
এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। মহকুমা স্বাস্থ্য প্রশাসনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে বিশেষ পদক্ষেপ করা হবে। তবে এই ঘটনায় আবারও প্রশ্ন তুলল সরকারি হাসপাতালের চিকিত্সা পরিষেবা নিয়ে। কীভাবে মেয়াদ উত্তীর্ণ স্যালাইন রোগীকে দিয়ে দেওয়া হল, কেন সেই বিষয়টি কেউ খেয়ালই করলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ক্ষুব্ধ রোগীর আত্মীয়-পরিজনরা। এখন চিকিত্সায় কিছুটা সুস্থ ওই বৃদ্ধা। আরও পড়ুন: ‘ছেলেটা আমার চোখের সামনেই নীল হয়ে গেল… কিচ্ছু করতে পারলাম না’, আফসোস বাবার