AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘ছেলেটা আমার চোখের সামনেই নীল হয়ে গেল… কিচ্ছু করতে পারলাম না’, আফসোস বাবার

South 24 Parganas: রবিবার সাতটা নাগাদ বাড়ির উঠানেই খড়ের গাদার কাছে খেলছিল তারা। আচমকা অন্ধকারের মধ্যে আলিনুরের পায়ে কিছু একটা কামড়ে দেয়।

'ছেলেটা আমার চোখের সামনেই নীল হয়ে গেল... কিচ্ছু করতে পারলাম না', আফসোস বাবার
নিজস্ব চিত্র
| Edited By: | Updated on: Sep 06, 2021 | 9:15 AM
Share

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: সাপের কামড়ে অসুস্থ ছেলের মৃত্যুতে চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ তুলল পরিবার। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিংয়ের দুই নম্বর ব্লকের মাঠেরদিঘি এলাকায়। মৃত শিশুর নাম আলিনর মিস্ত্রি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে মঠেরদিঘী গ্রামের বাসিন্দা দম্পতি জিয়ারুল মিস্ত্রি ও রসিদা বিবি। দম্পতির দুই ছেলে। রবিবার সাতটা নাগাদ বাড়ির উঠানেই খড়ের গাদার কাছে খেলছিল তারা। আচমকা অন্ধকারের মধ্যে আলিনুরের পায়ে কিছু একটা কামড়ে দেয়।

আলিনুর চিত্কার করে মাটিতে শুয়ে পড়ে। পায়ের ক্ষত দেখে তার বাবা-মায়ের মনে হয় কোনও সাপেই কামড়েছে তাকে। টর্চের আলো ফেলতে সাপটি চলে যেতেও দেখেন তাঁরা। যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকে আলিনুর।

পরিবারের লোকজন তড়িঘড়ি ওই নাবালককে স্থানীয় মঠেরদিঘি ব্লক গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য। সেখানে কিছুক্ষণ চিকিৎসার পর নাবালকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়।মঠেরদিঘি হাসপাতালের চিকিৎসকরা রাতেই তড়িঘড়ি ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেন।

এরপর ওই নাবালককে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত বলে ঘোষনা করেন।মুহূর্তে হাসপাতালে উত্তেজনা তৈরি হয়। আলিনুরের বাবার অভিযোগ, চিকিত্সায় গাফিলতি ছিল। সঠিক সময়ে চিকিত্সা করলে তাঁর ছেলের মৃত্যু হত না।

ক্যানিং থানার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। তবে মঠেরদিঘি হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিত্সায় গাফিলতির অভিযোগ তুলেছেন তাঁরা। আলিনুরের বাবার অভিযোগ, “আমরা প্রথমে ওই হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম ঠিকই। কিন্তু ওঁরাই বা ওতক্ষণ কেন ফেলে রাখলেন? যদি ওখানে চিকিত্সা না হত, তো আগেই রেফার করে দিতে পারতেন। তাহলে আমার ছেলেটা বেঁচে যেত।”

প্রসঙ্গত, প্রতি বছর সাপের কামড়ে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং, সুন্দরবন এলাকার বহু মানুষের মৃত্যু হয়। বেশিরভাগ মৃত্যুর ঘটনাই ঘটে সর্প দংশনের পর ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বদলে ওঝা কিংবা গুণীনের কাছে নিয়ে যাওয়ায়। বহু সচেতনতা প্রচার কর্মসূচি, পাড়ায় পাড়ায় সতর্ক প্রচারেও কাজ হয়নি। এখনও সমাজের একটা বড় অংশে গেঁথে বসে রয়েছে এই কুসংস্কারের ব্যাধি। তবে সেই ব্যাধি যে ধীরে ধীরে কাটছে। সচেতনভাবেই আলিনুরের পরিবার তাদের ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু তাদের ক্ষোভ হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও সঠিক পরিষেবা মিলল না। আগেই যদি ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যেতেন, তাহলে সঠিক পরিষেবা পেতেন বলে মনে করছেন আলিনুরের বাবা-মা।

যদিও এই প্রসঙ্গে মাঠেরদিঘি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। গ্রামের একদম প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাসপাতালগুলিতে যে এখনও যথাযথ ব্যবস্থা নেই, তা প্রমাণ করল এই ঘটনা। আলিনুরের মৃত্যুতে আবারও প্রশ্ন তুলল প্রত্যন্ত গ্রামীণ হাসপাতালগুলির পরিষেবা ও চিকিত্সা সরঞ্জাম নিয়ে। তাই আলিনুরের বাবার বক্তব্য, প্রথমেই ছেলেকে ক্যানিং হাসপাতালে নিয়ে গেলে বাঁচানো যেত। নাবালকের বাবার কথায়, “সাপটা পায়ে কামড়ায়। আমরা দশ মিনিটের মধ্যেই হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। একটা সুই দিয়েছিল ওরা, বলেছিল এতেই ভালো হয়ে যাবে। আধ ঘণ্টা পর দেখছি ছেলেটা আমার নীল হয়ে যাচ্ছে। আগেই তো ওরা বলে দিতে পারত। বমি করছিল। ছেলেটাকে বসিয়ে রেখে দিয়েছে।”

আরও পড়ুন: আজ দিল্লিতে ইডি-র ‘ফেস টু ফেস’! দুর্নীতি প্রমাণের চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন অভিষেক