ডায়মন্ড হারবার: আষাঢ়ে আশা না মিটলেও শ্রাবণে বাঙালির পাতে ইলিশ পড়ছেই! গত তিন দিনে মৎস্যজীবীদের জালে যত রুপোলি শস্য উঠল, তাতে তেমনটাই মনে করা হচ্ছে। টন টন ইলিশ উঠছে। ঝুড়ি ভরা সেই ইলিশের ছবি দেখলেই মন ভাল হয়ে যাবে খাদ্যরসিক বাঙালির। হাত ছোঁয়ানো যাবে না, এমন দামও নয়। গত কয়েকদিন ধরে যে বৃষ্টি চলছে রাজ্যে, তার জন্যই বাজারে মিটেছে ইলিশের অভাব।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ, নামখানা, ফ্রেজারগঞ্জ, রায়দিঘি, পাথরপ্রতিমার ঘাটে তোলা হয়েছে টন টন ইলিশ। মৎস্যজীবীরা জানাচ্ছেন প্রায় ১০০টন টাটকা ইলিশ উঠেছে সমুদ্র থেকে। আগামী কয়েকদিনে আরও ইলিশ ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে ঘাটগুলিতে, কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার জন্য ফের সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে। গভীর সমুদ্র থেকে বেশিরভাগ ট্রলারই সুন্দরবনের বিভিন্ন ঘাটে ফিরে এসেছে।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর ফের পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়া যাবে বলেই মনে করছেন মৎস্যজীবী সংগঠনের কর্মকর্তারা। জানা গিয়েছে, নিম্নচাপের জেরে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় সমুদ্রে এই মুহূর্তে ইলিশ ধরার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে মাছ। ইলিশের ওজনও নেহাত কম নয়, এগুলি যে সুস্বাদু হবে, তেমনটাই বলছেন ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার নামখানায় দেড় কিলো ওজনের ইলিশও নিলাম হয়েছে। ইলিশের জোগান বাড়ায় দামও কমেছে বেশ কিছুটা।
ডায়মন্ড হারবারের নগেন্দ্র বাজার মাছের আড়ত ঘুরে ইলিশ পৌঁছে যাবে রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে। চলতি বছরে ১৫ জুন থেকে শুরু হয়েছিল ইলিশ ধরার মরসুম। বৃষ্টির ঘাটতির জন্য সমুদ্রে গিয়েও কার্যত খালি হাতে ফিরতে হচ্ছিল কয়েক হাজার ট্রলারকে। এরপর গত ১৫ দিন ধরে আরও এক বাধা। সমুদ্র উত্তাল থাকায় বারবার জারি হয় সরকারি নিষেধাজ্ঞা।
নিষেধাজ্ঞা ওঠার পর সমুদ্রে ফের পাড়ি দেন মৎস্যজীবীরা। বৃষ্টি শুরু হয় সাগরে। সঙ্গে পূবালী বাতাস। অনুকুল পরিবেশ তৈরি হওয়াতেই জালে পড়তে শুরু করে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ।
কাকদ্বীপ ফিশারম্যান ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিজন মাইতি জানিয়েছেন, গত ২৯ জুন পর্যন্ত সমুদ্রে যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করা
হয়েছিল। কিন্তু গত তিনদিনে ১০০ টনের বেশি মাছ উঠেছে। হাসি ফুটেছে মৎস্যজীবী ও ব্যবসায়ীদের মুখে। তিনি জানিয়েছেন, জোগান বেশি হওয়ায় দাম এসেছে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্য়েই। তবে ফের আবহাওয়া খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।