কলকাতা: প্রথমে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে বসে, এরপর শুক্রবার সোনারপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব লিভার ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে; দুই জায়গা থেকেই মোদী সরকারের ভ্যাকসিন নীতির সমালোচনায় আরও একধাপ এগোলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিত্ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
সেই মঞ্চে হাজির হয়ে তিনি বলেন, “মানবিকতা এবং বিজ্ঞানকে এক হতে হবে। এই প্রশ্নে আমরা সারা পৃথিবীতে পিছিয়ে পড়েছি।” ভুল বিজ্ঞান যে সবচেয়ে বড় ভুল, সে কথা মনে করিয়ে দিতে করোনার প্রথম পর্যায়ে কেন্দ্রীয় সরকারের জারি করা লকডাউনের প্রসঙ্গ তুলে আনেন তিনি। বলেন, “কেন্দ্র শুরুতে যখন সব বন্ধ করে দিল, তখনও রোগ ছড়ায়নি। তারপর ধীরে ধীরে বিজ্ঞানসম্মত মতেই লকডাউন তুলে নেওয়া হয়। কিন্তু বিধিনিষেধ শিথিল হতেই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে করোনা।” ফলে প্রথমেই কড়া লকডাউন যে ভুল বিজ্ঞান ছিল, কিছুটা যেন সেদিকেই ইঙ্গিত করে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন তিনি।
কোভিড ১৯ ভাইরাসের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে লড়াইয়ে জীয়নকাঠি হল ভ্যাকসিন। রেকর্ড সময়ে টিকা না এলে যে কী হত! চোখ বুজে বলা যায়, আরও অসংখ্য মানুষের মৃত্যু দেখত দুনিয়া। কিন্তু ভ্যাকসিন চলে আসার পরও এর সুফল কি সারা বিশ্ব সমান ভাবে পাচ্ছে? উত্তর না। পেলে, তৃতীয় বিশ্বের মানুষ খাবি খেত না। ভ্যাকসিনের আশায় প্রথম বিশ্বের দিকে হা পিত্যেশ করে তাকিয়ে থাকতে হত না। কেউ বলত না, সারা বিশ্বের মানুষের টিকাকরণে আরও বছর পাঁচেক সময় লাগবে। শুক্রবারের অনুষ্ঠানে বললেন অভিজিত্ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়।
লিভার ফাউন্ডেশনের নতুন ভবনের উদ্বোধন হল শুক্রবার। প্রকাশিত হল বিজ্ঞান বিষয়ক ডিজিটাল দৈনিক ‘বিজ্ঞানভাষ’। সেই অনুষ্ঠানেই হাজির ছিলেন নোবেলজয়ী। বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ? অনেক পুরোনো সেই প্রশ্নেই যেন নতুন করে আলো ফেললেন অর্থনীতিবিদ। বোঝালেন, বিজ্ঞানকে কুক্ষিগত করে রাখার প্রবণতা কতটা আত্মঘাতী, সারা দুনিয়ার জন্যই। আরও পড়ুন: ‘ভুল’ থেকে কবে শিক্ষা নেবে পুরসভা? কোভিশিল্ডের শূন্য ভাঁড়ার নিয়ে প্রশ্ন খোদ স্বাস্থ্যভবনে