কুলতলি: জলে কুমির, ডাঙার বাঘ। আর তা নিয়েই সুন্দরবনের রোজ নামচা। মাঝেমধ্যেই বাঘ জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসে। লোকালয়ের কাছাকাছি শোনা যায় বাঘের গর্জন। একবার বাঘে-মানুষে মুখোমুখি হলেই সর্বনাশ। কিছুদিন আগেই ঝড়খালিতে বাঘের হানায় মৃত্যু হয়েছে এক মৎস্যজীবীর। সেই ঘটনার আতঙ্ক এখনও আবছা হয়নি সুন্দরবনবাসীর মন থেকে। আর এরই মধ্যে ফের একবার লোকালয়ের কাছেই মিলল বাঘের পায়ের ছাপ। এবার মৈপীঠ থানা এলাকার কুলতলির ব্লকের ভুবনেশ্বরীতে।
বাঘের আতঙ্ক দানা বাঁধতে শুরু করেছিল বৃহস্পতিবার রাত থেকে। ভয়ে সিঁটিয়ে ছিল গোটা ভুবনেশ্বরী গ্রাম। সারা রাত গ্রামে কারও দু’চোখের পাতা এক হয়নি। এলাকাবাসীদের দাবি, তাঁরা নাকি সারা রাত ধরে বাঘের গর্জন শুনতে পেয়েছেন কাছেপিঠে। এরপর রাতের ঘুম উড়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক। রাতে কেউই আর ভয়ে বাড়ি থেকে বেরোননি। কিন্তু ঘরে বসে থাকলে তো চলবে না। রুজি রুটির টানে তাই শুক্রবার সকাল হতেই আবার বেরোতে হয় তাঁদের। সেই সময়ই ভুবনেশ্বরী গ্রাম লাগোয়া ম্যানগ্রোভের জঙ্গলে, যে দৃশ্য তাঁরা দেখতে পান, তাতে গোটা শরীর দিয়ে হিমস্রোত হয়ে যায় গ্রামবাসীদের। বাঘের পায়ের ছাপ। একেবারে টাটকা। ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের নরম কাদা মাটির মধ্যে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে বাঘের ‘পাগ মার্ক’।
এরপর থেকেই আতঙ্ক যেন আরও জাঁকিয়ে বসেছে গ্রামবাসীদের মনে। তাঁদের সন্দেহ, বাঘ এখনও লোকালয়ের আশপাশে জঙ্গলের মধ্যেই কোথাও ঘাপটি মেরে বসে আছে। এদিকে বাঘের টাটকা পায়ের ছাপ দেখার পরই এলাকাবাসীরা খবর দেন বন দফতরে ও পুলিশের কাছে। মৈপীঠ থানার পুলিশ ও বন দফতরের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। গতকাল দীর্ঘক্ষণ ধরে লোকালয়ের লাগোয়া জঙ্গলে বাঘের খোঁজ চালান বনকর্মীরা। তবে শেষ পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ীস কোনও বাঘের দেখা পাওয়া যায়নি। বনকর্মীদের প্রাথমিক অনুমান, বাঘটি সম্ভবত আবার গভীর জঙ্গলে ফিরে গিয়েছে।