Royal Bengal Tiger: সকাল সকাল মিলল নখের আঁচড়ের দাগ, ‘পাঁকাল’ বাঘকে ধরতে ছোট করা হচ্ছে খাঁচার পরিধি

South 24 Pargana: বনদফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন, খাঁচার পরিধি ছোট করে আনা হচ্ছে। গ্রামবাসীদেরও সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

Royal Bengal Tiger: সকাল সকাল মিলল নখের আঁচড়ের দাগ, 'পাঁকাল' বাঘকে ধরতে ছোট করা হচ্ছে খাঁচার পরিধি
পাওয়া গেল বাঘের নখের দাগ, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 27, 2021 | 11:18 AM

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: রাত পেরিয়ে দিনের আলো ফুটেছে। তবু খাঁচায় ধরা পড়েনি কুলতুলির দক্ষিণ রায়। সকালেই মিলেছে বাঘের নখের আঁচড়ের দাগ। আর তাতেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে শেখ পাড়া ও আদিবাসী পাড়ার আশেপাশেই রয়েছে ওই বাঘ। কিন্তু, সেই বাঘের দেখা কোথায়! রাতভর পাহারা দিয়েও খাঁচায় পোরা যায়নি তাকে। যদিও, বনদফতরের কর্মীরা জানিয়েছেন, খাঁচার পরিধি ছোট করে আনা হচ্ছে। গ্রামবাসীদেরও সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বাঘ ধরতে ঠিক কী কী পদক্ষেপ করছে বনদফতর?

বনদফতর সূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই গোটা এলাকা ঘিরে ফেলেছেন বনকর্মীরা।  জোড়া দুটি খাঁচার পরিধি ছোট করা হচ্ছে। কারণ, আয়তন ছোট হলে সহজে ধরা পড়বে বাঘটি। খাঁচার মধ্যে রাখা হয়েছে ছাগলও। শুধু তাই নয়, বাড়ানো হয়েছে ট্রাঙ্কুলাইজ়ারের পরিমাণ। গোটা এলাকায় চলছে চিরুনি তল্লাশি।  গ্রামবাসীদের বাড়ি থেকে বেরতে নিষেধ করা হয়েছে। যাঁরা বিপদসীমার মধ্যে রয়েছেন তাঁদের নিরাপদ আস্তানায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চলছে।

বনদফতরের এক কর্মীর কথায়, “বাঘটা অনেকদূর থেকে  একটানা ঘুরে ঘুরে যাচ্ছে। তাই, ও ক্ষুধার্ত রয়েছে। যেকোনও সময়েই ফাঁদে ধরা দেবে। আমরা তো চেষ্টা চালিয়েই যাচ্ছি। আশা করছি ধরতে পারব।” অন্য আরেক বনকর্মীর কথায়, “অনেকসময় এক-দুইদিনে বাঘ ধরা পড়ে না। কখনও কখনও এক সপ্তাহও লেগে যেতে পারে। কিছুদিন আগে ঝড়খালিতেও এমন হয়েছিল। এক সপ্তাহ পর আমরা বাঘটাকে কবজা করতে পেরেছিলাম। তাই  ওভাবে বলা যায় না। তবে, হ্যাঁ, বাঘটাকে ধরা যাবে তা নিশ্চিত। সাধারণ মানুষের আতঙ্ক কমাতে হবে।”

রাতভর ফাঁদ পেতেও ধরা দিল না দক্ষিণ রায়

সোমবার সকাল সকাল মিলেছে বাঘের নখের আঁচড়ের দাগ। সেই দাগ দেখে বনকর্মীরা স্পষ্টই বুঝেছেন আশেপাশেই রয়েছে বাঘটি। এদিকে, বাঘ ধরা না পড়ায় রীতিমতো আতঙ্কে ভুগছেন এলাকাবাসী। তাঁদের অনেকেই বলছেন, ঘরে আলো জ্বালানোর উপায় নেই।  কেউ বা চিন্তা করছেন যদি বাড়িতেই হামলা করে ডোরাকাটা! রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে তাঁদের। আদিবাসীদের অনেকেই লাঠি হাতে গ্রামের সীমানা পাহারা দিচ্ছেন।

কিন্তু, রাতভর ফাঁদ পাতাই সার। দেখা দেননি দক্ষিণ রায়। তাই অপেক্ষা ছাড়া গতি নেই। একইসঙ্গে নাইলনের জালে ঘেরা জঙ্গলের গাছে তৈরি মাচায় অভিজ্ঞ বনকর্মীরা ঘুম পাড়ানি বন্দুক ও সার্চ লাইট নিয়ে উঠে পড়েছেন। সেখান থেকেই বাঘের উপর নজরদারি চলবে। মাচাতে থেকেই বনকর্মীরা বাঘটিকে ঘুমপাড়ানি গুলি করে ধরতে তৎপর।

বন আধিকারিক, ডিএফও, কনজারভেটর অব ফরেস্টও রয়েছেন সেখানে। বাঘের উপর কাজ করে এমন সংগঠনের লোকজনও হাজির হয়েছেন রবিবার সন্ধ্যায়। গত তিনদিন ধরে এই বাঘটিকে কোনও ভাবেই ধরা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ এলাকার লোকজনের।

বাঘে-মানুষে মুখোমুখি 

বৃহস্পতিবার দর্শন গায়েনের চকে ছিল বাঘটি। শুক্রবার ৫ নম্বর গরাণকাটির কাছে চলে যায়। শনিবার বিকালে চলে যায় পিয়ালির জঙ্গলে। জাল দিয়ে জঙ্গল ঘিরছিলেন বনকর্মীরা। তার মধ্যেই গর্জন শুনে এগিয়ে যান গ্রামবাসীরা। বাঘের হানা থেকে বাঁচতে গিয়ে জখম হন এক গ্রামবাসী। তিনদিন ধরে কুলতলির লোকালয়ের কাছে রয়েছে ওই বাঘ।

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডিএফও মিলন মণ্ডল বলেন, “গত চারদিন ধরে ও বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। ও একটা স্ট্রেসের মধ্যে রয়েছে। ওর মধ্যেও একটা আতঙ্ক কাজ করছে। এদিকে গ্রামবাসীরাও আতঙ্কিত। সে কারণে হয়তো বাঘটা হয়ত আমাদের তৈরি করা ঘেরাটোপকে এড়িয়ে নিজের জায়গায় ফেরার চেষ্টা করছে। তবে রবিবার যেখানে ওর দেখা পেয়েছি এবং ফেন্সিং আমরা যেভাবে করেছি। আগে শুধু খাঁচা ছিল, এবার সঙ্গে মাচাও রেখেছি। কোনওভাবে ও যদি খাঁচার কাছে এলেও সেখানে না ঢোকে আমাদের লোকজন মাচায় ঘুমপাড়ানি ওষুধ নিয়ে থাকবেন। তাঁরা চেষ্টা করবেন বাঘটিকে ঘুম পাড়ানি গুলিতে কাবু করার।”

রাজ্যের বন প্রতিমন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেন, “আমরা বনদফতরের তরফ থেকে সবরকমভাবে চেষ্টা চালাচ্ছি। সাধারণ মানুষকে বলব, আপনারাও সবরকম সাহায্য করুন।”

আরও পড়ুন: ‘দিদিকেই বরং রাজ্যপাল করে দেওয়া হোক!’