দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে প্রকাশ্যে দালালরাজের অভিযোগ উঠল। এমনও অভিযোগ, হাসপাতালে রোগীর চক্ষু পরীক্ষা করছে দালালরাই। তাঁরাই বিক্রি করছেন চশমাও। সুন্দরবনের ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে এমন অভিযোগ সামনে আসতেই অস্বস্তি বেড়েছে কর্তৃপক্ষের। যদিও প্রকাশ্যে এ নিয়ে হাসপাতালের তরফে কোনও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আউটডোরে চক্ষু বিভাগে চিকিৎসার জন্য প্রচুর রোগী লাইন পড়ে নিয়মিত। সম্প্রতি এরকমই লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন রোগীরা। অভিযোগ, সে সময় চক্ষু বিভাগের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন জনৈক অনিল মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি।
রোগীদের অভিযোগ, ওই অনিল মণ্ডলই রোগীদের চোখে টর্চ মেরে পরীক্ষা নিরীক্ষা করছিলেন। এমনকী রোগীদের হাত থেকে চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে নেড়েচেড়েও দেখেন তিনি বলে অভিযোগ। ডাক্তার রোগী দেখার আগে ওই ব্যক্তিই বেশ কয়েকজনকে চশমা নেওয়ারও পরামর্শ দেন।
এমনকী অভিযোগ, সেই চশমা তিনিই তৈরি করে দেবেন বলেও রোগীদের জানান। ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চশমা নিতে ও চক্ষু চিকিৎসা করাতে এসেছিলেন বাসন্তীর মোকামবেড়িয়ার শঙ্কর আইচ, ক্যানিংয়ের ছোট দুমকি গ্রামের শান্তনু ঘোষ-সহ বেশ কয়েকজন।
শঙ্করবাবুর অভিযোগ, এক সপ্তাহ আগে অনিল মণ্ডল নামে ওই ব্যক্তি চোখের ডাক্তারের কাছে বসে চশমা করে দেওয়ার নাম করে ২০০ টাকা নিয়েছিলেন। শঙ্করবাবু জানান, উনি ভেবেছিলেন ওই ব্যক্তিই বোধহয় চিকিৎসক। পরে জানতে পারেন, চিকিৎসা দুনিয়ার সঙ্গে দূর দূরান্ত অবধি তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই। এদিকে ২০০ টাকা দিলেও চশমা তিনি আর পাননি।
অন্যদিকে শান্তনু ঘোষ নামে এক ব্যক্তি যিনি এই হাসপাতালে চোখের ডাক্তার দেখাতে এসেছিলেন, তাঁর কথায়, “ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে আউটডোরের চক্ষু বিভাগে চক্ষু পরীক্ষা করার জন্য এসেছিলাম। তখন ওই ব্যক্তি চক্ষু বিভাগের চিকিৎসকের সামনে ইচ্ছামতো নির্দেশ দিচ্ছিলেন। হাসপাতালে চলছে দাদালরাজ। হাসপাতালে আসা রোগীরা যাতে কোনও দালালের হাতে না পড়ে তাই আমি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছি।”
অভিযুক্ত অনিল মণ্ডলেরও বক্তব্য, দু’মাস ধরে তিনি হাসপাতালের মধ্যে এই কাজ করছেন। তবে এ নিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। ক্যানিং পশ্চিমের বিধায়ক পরেশরাম দাস জানান, দীর্ঘদিন ধরেই ক্যানিং মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে দালালরাজের অভিযোগ উঠছে। সেটা বন্ধ করার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। বিধায়কের দাবি, এই বেআইনি কাজকর্ম রুখতে ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে সিভিক ভলান্টিয়ার ও সিভিল ডিফেন্সের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তারপরও কেন এরকম অভিযোগ উঠছে? বিধায়ক জানান, যদি প্রমাণ পাওয়া যায় নিশ্চয়ই কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আরও পড়ুন: Primary Literacy in West Bengal: সেরা হয়েও সন্দিহান! প্রাথমিক শিক্ষায় শীর্ষে থেকেও এখনও পিছিয়ে বাংলা