দক্ষিণ ২৪ পরগনা: হাতে একটা প্ল্যাকার্ড। তাতে মোটা কালিতে লেখা ‘বিচার চাই’। থানায় সামনে ধর্নায় বসেছেন এক বৃদ্ধ দম্পতি। আপাত মনে হতেই পারে, কোনও রকম অত্যাচারের শিকার তাঁরা। কিন্তু বিষয়টা হল অন্য। ভাড়াটিয়ার জুলুমের শিকার হয়েছেন খোদ বাড়ি মালিকই। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাশীপুরে।
সত্তরোর্ধ্ব দম্পতির দু’জনের হাতে প্ল্যাকার্ড। কার শাস্তি চাইছেন ওই দম্পতি, কীসের বিচার চাইছেন তাঁরা? প্রশ্ন করতেই জানা গেল, ওই দম্পতির নাম সমীর গঙ্গোপাধ্যায় ও কল্পনা। কাশীপুর গ্রামে তাঁরা দীর্ঘদিনের বাসিন্দা।
নিঃসন্তান দম্পতির ভিটে বাড়ি বলতে একটি টিনের দোচালা আছে। সেখানেই আট বছর আগে আশ্রয় নেন জয়নগর গ্রামের বাসিন্দা সুকুমার মণ্ডল ও কাকলি মন্ডল। বৃদ্ধ দম্পতির বয়ান অনুযায়ী, স্থানীয় একটি স্কুলে তাঁদের একমাত্র ছেলেকে পড়ানোর জন্য ওই টিনের বাড়িতে আশ্রয় চান তাঁরা। অভিযোগ, ছেলে স্কুল শেষ করে কলেজে ভর্তি হলেও ওই দম্পতি এখন বাড়ি ছাড়তে নারাজ। তাঁরা আট বছর জবরদখল করে রেখেছেন নিঃসন্তান দম্পতির বসতবাড়ি।
এই নিয়ে কাশীপুর থানা, ভাঙড় ২ বিডিও অফিস, তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। শেষমেশ তাঁরা বিচার চাইতে থানার সামনে ধর্নায় বসেছেন।
জানা যাচ্ছে, অভিযুক্ত কাকলি মণ্ডল আবার পেশায় একজন অঙ্গণওয়াড়ি কর্মী। একজন সরকারি চাকুরিজীবী হয়েও তিনি কীভাবে অন্যের বাড়ি দখল করে আট বছর ধরে বসবাস করছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রতিবেশীরা। যদিও এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি কাকলি বা সুকুমার কেউই।
অসহায় ওই বৃদ্ধের কেবল একটাই কথা, “আমার বিচার চাই। আমাকে ওরা বলেছিল, কেউ ওদের জ্বালাতন করছে। তাই আমাদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছিলাম। এখন জোরজবরদস্তি আমার বাড়িতে রয়েছে। ৮ বছর হয়ে গেল, একটা টাকা পর্যন্ত ভাড়া দেয় না।” প্রতিবেশীরাও বৃদ্ধ দম্পতির পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু প্রশাসনিক সাহায্যের আশায় ওই অসহায় দম্পতি।